বগুড়ায় বিদেশফেরত ৯৪ ব্যক্তির হদিস নেই

বগুড়া
বগুড়া

গোয়েন্দা তালিকা অনুযায়ী চলতি মাসে ১৯৯ জন প্রবাসী বিভিন্ন দেশ থেকে বগুড়ায় ফিরেছেন। এর মধ্যে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ১০৩ জনকে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে রেখেছে। দুজন শঙ্কামুক্ত। অবশিষ্ট ৯৪ জনের কোনো হদিস নেই। বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা থাকলেও বিদেশফেরত এসব ব্যক্তির তথ্য নেই স্বাস্থ্য বিভাগেও। জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বগুড়া জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা (ডিএসবি) সূত্রে জানা গেছে, এসবি থেকে পাঠানো তালিকা অনুযায়ী ১ থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত বগুড়া জেলায় বিদেশ থেকে ফিরেছেন ১৯৯ জন।

বগুড়ার ডিএসবির পরিদর্শক শাহজাহান আলী বলেন, এসবি থেকে পাঠানো একটি তালিকা গত বুধবার জেলা পুলিশের হাতে এসেছে। তালিকা অনুযায়ী ১ থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত বিদেশফেরত মানুষের সংখ্যা ১৯৯।

কিসের ভিত্তিতে এসবি এ তালিকা পাঠিয়েছে, জানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, পাসপোর্টে বগুড়ার ঠিকানা ব্যবহার করে বিদেশ গেছেন এবং চলতি মাসে যাঁরা দেশে ফিরেছেন, এমন মানুষের নাম তালিকায় স্থান পেয়েছে। এ তালিকা পুলিশ সুপারের (এসপি) মাধ্যমে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগেও পাঠানো হয়েছে।

বগুড়ার জেলা সিভিল সার্জন গউসুল আজিম চৌধুরী প্রথম আলোকে জানান, এসপি বিদেশফেরত লোকজনের একটি তালিকা পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে চলতি মাসে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ১০৫ জনকে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। বগুড়া সদরে একজন এবং সোনাতলা উপজেলায় একজনের কোয়ারেন্টিন শেষ হয়েছে। গত বুধবার পর্যন্ত জেলায় ১০৩ জন বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন।

সিভিল সার্জন বলেন, ‘গোয়েন্দা তালিকায় বিদেশফেরত মানুষের সংখ্যা ১৯৯ হয়ে থাকলে অবশিষ্ট ৯৪ জনের কোনো তথ্য নেই আমাদের কাছে। তাঁরা কোথায় কীভাবে রয়েছেন, কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন, নাকি নেই, তা তালিকা ধরে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।’ তিনি আরও জানান, বিদেশফেরত মানুষের তালিকা এত দিন স্বাস্থ্য বিভাগে ছিল না। এলাকার স্বাস্থ্যকর্মী, স্থানীয় সূত্র ও জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিদেশফেরত মানুষের খবর পেয়ে তাঁকে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এখন তালিকা হাতে পাওয়ায় তথ্য পাওয়া সহজ হবে।

সিভিল সার্জন জানান, বুধবার করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ কমিটির সভায় বিদেশফেরত ব্যক্তিতে বাড়িতে সতর্কতার সঙ্গে কোয়ারেন্টিনে থাকার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেউ নির্দেশ না মানলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অর্থদণ্ড দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া এ কাজে জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জেলায় নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নিয়ে শঙ্কা-উৎকণ্ঠা বাড়লেও সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে এ রোগ নির্ণয়ের জন্য কোনো কিট নেই।

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনাভাইরাস-আক্রান্ত রোগীদের জন্য আইসোলেশন বা পৃথক ইউনিট প্রস্তুত রাখা হলেও রোগ নির্ণয়ের জন্য কিট নেই বলে স্বীকার করেছেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আবদুল ওয়াদুদ। তিনি বলেন, করোনোভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহ হলে সঙ্গে সঙ্গে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) জানানোর নির্দেশনা রয়েছে। এর বাইরে রোগ শনাক্তের জন্য কোনো কিট সরবরাহ করা হয়নি।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে খোলা নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বুধবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত নতুন করে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে ৩৪ জনকে।