সড়কে বেড়া, অবরুদ্ধ গ্রাম

সানিয়ারজান নদ রক্ষা বাঁধে নিজের জমির অংশ আছে দাবি করে এক ব্যক্তি বেড়া দিয়েছেন। ফলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে একটি গ্রামের বাসিন্দারা। ছবি: প্রথম আলো
সানিয়ারজান নদ রক্ষা বাঁধে নিজের জমির অংশ আছে দাবি করে এক ব্যক্তি বেড়া দিয়েছেন। ফলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে একটি গ্রামের বাসিন্দারা। ছবি: প্রথম আলো

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় সানিয়ারজান নদ রক্ষা বাঁধে নিজের জমির অংশ আছে দাবি করে এক ব্যক্তি বেড়া দিয়েছেন। ফলে পাঁচ দিন ধরে পাশের উপজেলার ছিটজম গ্রামের বাসিন্দারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। তাদের চলাচলের পথই এই বাঁধ।

বাঁধটি হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের দালালপাড়া গ্রাম ও পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের শেষ সীমানার শেষ গ্রাম ছিটজম গ্রামের মধ্য দিয়ে চলে গেছে। এই বাঁধের ওপর দিয়ে প্রায় ৪০ বছর ধরে দুই গ্রামের লোকজন চলাচল করছে বলে অবরুদ্ধ বাসিন্দাদের দাবি। আর এই বাঁধে নিজের জমি দাবি করে বেড়া দিয়েছেন দালালপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি।

গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ছিটজম গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি বাঁশ ও বেড়া দিয়ে দুই দিকে আটকে দেওয়া। রাস্তার দুই দিকে গভীর পুকুর ও বাঁশঝাড় থাকার কারণে কোনোভাবেই গ্রামের লোকজন বাড়ির বাইরে আসতে পারছে না।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, নজরুল ইসলাম জমিসংক্রান্ত জটিলতার অজুহাত দেখিয়ে পাঁচ দিন ধরে তাঁদের চলাচলের একমাত্র নদ রক্ষা বাঁধের ওপর সরকারি রাস্তাটিতে দুটি বেড়া দিয়েছেন। রাস্তার দুই দিকে গভীর পুকুর ও বাঁশঝাড় থাকার কারণে কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে আসতে পারছেন না তাঁরা। অনেকেই বেড়া অতিক্রম করতে গিয়ে আহত হয়েছেন। কোনো যানবাহনও চলাচল করতে পারছে না। তাঁদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে। তাঁরা বিষয়টি দ্রুত সমাধান চান।

অবরুদ্ধ বাসিন্দাদের মধ্যে গোলাম হোসেন, বুলবুল হোসেন ও সফিউল ইসলামের ভাষ্য, সানিয়ারজান নদ বাঁধ হিসেবে তৈরি করা এই রাস্তা দিয়ে তাঁরা প্রায় ৪০ বছর ধরে যাতায়াত করছেন। প্রতিবেশী নজরুল হঠাৎ রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে তাঁরা একরকম অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।

নজরুল ইসলামের দাবি, তিনি তাঁর নিজের জমির ওপর বেড়া দিয়েছেন। কোনো রাস্তার ওপর নয়। ২০০০ সালে স্থানীয় বেলাল হোসেন ও লোকমান হোসেনের কাছ থেকে তিনি ১৫ শতক জমি কেনেন। এর মধ্যে ৯ শতক জমি তাঁর দখলে আছে। আর বাঁধের সরকারি অংশের রাস্তাটি পাশের পুকুরে চলে গেছে। তিনি বলেন, ‘৭ শতাংশ জমি উদ্ধারের জন্য আমি সবার হাতে-পায়ে ধরছি, কিন্তু সঠিক সমাধান না পেয়ে আমার জমির ওপর বেড়া দিয়েছি।’

ফকিরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ জানান, ওই ওয়ার্ডের মেম্বার মফিজুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি আলোচনা করে আজকের (শনিবার) মধ্যে বিষয়টির সমাধান করবেন।