হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নিয়ে চলছে গাইবান্ধা উপনির্বাচনের ভোট

গাইবান্ধা-৩ উপনির্বাচনে আজ শনিবার সকালে সাদুল্যাপুরের তরফবাজিতপুর দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের চিত্র। ছবি: প্রথম আলো
গাইবান্ধা-৩ উপনির্বাচনে আজ শনিবার সকালে সাদুল্যাপুরের তরফবাজিতপুর দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের চিত্র। ছবি: প্রথম আলো

করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে আজ শনিবার গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্যাপুর-পলাশবাড়ী) আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। সকাল ৯টায় একযোগে মোট ১৩২টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

আজ সকালে সাদুল্যাপুর বহুমুখী পাইলট উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, ভোটারের উপস্থিতি কম। এখানে মোট ভোটার ৪ হাজার ৫৫৪। সকাল পৌনে ১০টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ১০০টি। এই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা সাদুল্যাপুর উপজেলার পাঠানোছা গ্রামের ভোটার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সকাল সকাল ভোট দিলাম। কারণ, পরে লোকসমাগম হবে। করোনাভাইরাসের আতঙ্ক আছে।’ এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হরিপদ চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েনি। তারপরও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা আছে। ভয়ের কারণ নেই। তবে সকালে মানুষের কাজ থাকে। তাই সকালে উপস্থিতি কম। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে।’

আজ সকাল ১০টার দিকে সাদুল্যাপুরের বুজরুক রসুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, ভোটার উপস্থিতি কম। এখানে মোট ভোটার ৪ হাজার ৩৩২ জন। সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ২১৬টি। এই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা বুজরুক রসুলপুর গ্রামের ভোটার তোফায়েল হোসেন বলেন, ‘করোনা আতঙ্কে কেন্দ্রে আসতে চাইনি। কিন্তু প্রার্থীর কর্মীদের চাপাচাপিতে ভোট দিতে আসতে বাধ্য হলাম। ভোট দিয়েছি। এখন চলে যাচ্ছি। তবে এই কেন্দ্রে হাত ধোয়ার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি।’ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘বেলা বাড়লে ভোটারও বাড়বে। এখানে নির্বাচন কমিশন হাত ধোয়ার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’

আজ সকাল সোয়া ১০টায় সাদুল্যাপুরের পীরেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, মোট ২ হাজার ৮০০ ভোটের মধ্যে সকাল সোয়া ১০টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ১০০টি। এখানে ভোট দিতে আসা হাসানপাড়া গ্রামের সোলায়মান আলী বলেন, ‘লোক সমাগম বেশি হলে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে—এমন আতঙ্কে মানুষ ভোটকেন্দ্রে আসছেন না।’ এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শামসুল হুদা ভোটারদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘এই কেন্দ্রে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা আছে, ভয়ের কোনো কারণ নেই।’

গাইবান্ধা-৩ উপনির্বাচনে আজ শনিবার সকালে সাদুল্যাপুর বহুমুখী পাইলট উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটাররা হাত ধুয়ে ভোট দিতে যান। ছবি: প্রথম আলো
গাইবান্ধা-৩ উপনির্বাচনে আজ শনিবার সকালে সাদুল্যাপুর বহুমুখী পাইলট উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটাররা হাত ধুয়ে ভোট দিতে যান। ছবি: প্রথম আলো

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট চলছে। কোনো সমস্যা নেই। নির্বাচনে করোনার প্রভাব পড়েনি। তিনি বলেন, আজ একটি পৌরসভা ও ১৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই সংসদীয় আসনে ভোটগ্রহণ যথাসময়ে শুরু করা হয়েছে। এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৩৫ হাজার ২১১ জন। ভোট কেন্দ্র ১৩২টি। ভোটগ্রহণের জন্য ১৩২ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ৭৮৬ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও ১ হাজার ৫৭২ পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে।

গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে একজন সহকারী পরিদর্শকসহ ৫ জন পুলিশ ও ১২ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া দুই উপজেলায় ১০ প্লাটুন বিজিবি ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক র্যাব সদস্যের মোবাইল টিম দায়িত্ব পালন করছে। প্রতিটি ইউনিয়নে একটি মোবাইল টিম ও একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স এবং একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আছেন। এ ছাড়া সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সদস্য ও ৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচন তদারকির দায়িত্বে আছেন।

এ আসনে আওয়ামী লীগের সাংসদ ইউনুস আলী সরকার ২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর মারা যান। শূন্য আসনে এই উপনির্বাচন হচ্ছে। এই উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী উম্মে কুলসুম, বিএনপির প্রার্থী মইনুল হাসান সাদিক ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী মইনুল রাব্বী চৌধুরী।