করোনো সংক্রমণের পর দেশে অপরাধ কমছে

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

করোনা ভাইরাসের কারণে থানাগুলোতে অপরাধ রেকর্ডের হার কমে গেছে। শহর-গ্রামে একই অবস্থা। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, পথেঘাটে মানুষের কম চলাফেরা করা এবং বেশির ভাগ সময় ঘরে থাকার কারণে অপরাধ কম হচ্ছে।

তবে এ পরিস্থিতিকে অস্বাভাবিক বলছেন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এই সময়ে অনেক মানুষ যদি বেকার হয়ে পড়ে তাহলে ভাইরাস আতঙ্ক শেষ হওয়ার পর অপরাধ আবার বেড়ে যাবে। অভাবী মানুষের জমানো টাকা শেষ হলে তারা আয় রোজগারের জন্য মরিয়ে হয়ে উঠবেন। তখন পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে পারে।

দেশের ৬৪০টি থানায় প্রতি বছর গড়ে এক লাখ ৪০ হাজার অপরাধ থানায় রেকর্ড হয়। এই হিসেবে দিনে গড়ে প্রায় চারশটি অপরাধ রেকর্ড হয়। গ্রামের চেয়ে শহরে অপরাধ রেকর্ডের হার স্বাভাবিকভাবেই বেশি হয়। পাহাড়ি অঞ্চলের অপরাধ এমনিতেই কম হয়। করোনার কারণে গত মাস থেকে তা কমতে শুরু করেছে। তবে কমার পুরা সংখ্যা জানতে আগামী মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

পুলিশ কর্মকর্তারা মনে করেন, ঈদ, পূজা, পয়লা বৈশাখের মতো সার্বজনীন উৎসবের সময় অপরাধ কমে যায়। রোজার মাসে অপরাধ কমে। আবার বড় খেলাধুলার মতো আয়োজনের সময় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির মতো অপরাধ হয় না বললেই চলে। সাধারণ কিছু অপরাধ হলেও তার হার বেশি নয়।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি রেজাউল হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, করোনার কারণে অপরাধ কমে গেছে বলেই সবাই মনে করছেন। এ সময় থানায় অপরাধ কম রেকর্ড হচ্ছে।

রাজধানীর বিভিন্ন থানায় খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে থানায় মানুষ অভিযোগ নিয়ে কম আসছে। জানতে চাইলে লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এখন অনেক মানুষ নিজের বাসায় অবস্থান করছেন। তাদের চলাফেরাও নিয়ন্ত্রিত, সে কারণে হয়তো অপরাধ কম হচ্ছে। রাজধানীর ছয়টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেও একই চিত্র পাওয়া গেছে। তারা বলছেন, অন্য সময়ের চেয়ে বর্তমান সময়ে থানায় অভিযোগ আসার হার কমে গেছে।

তবে বর্তমান পরিস্থিতিকে ভয়াবহ বলছেন পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান। তিনি বলেন, করোনার কারণ দরিদ্র মানুষ হয়তো কিছুদিন ঘরে থাকবেন। কয়েক দিনের মধ্যে তাদের জমানো টাকা শেষ হয়ে গেলে তারা পথে নামবেন। এতে করে ওই সময়ে করোনার ছড়ানোর আশঙ্কা তৈরি হবে। আবার তারা কাজ না পেয়ে অপরাধে জড়িয়ে পড়বেন। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হবে। এ জন্য এসব মানুষ নিয়ে এখনই সরকারকে ভাবতে হবে। তা না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে যাবে।