রেলের টিকিট বিক্রি কমেছে ৩৫ শতাংশ

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

করোনাভাইরাস ছড়ানো ঠেকাতে ট্রেন চলাচল কাটছাঁট করার কথা ভাবছে রেল কর্তৃপক্ষ। রেলভবন থেকে প্রাথমিকভাবে কোন কোন ট্রেনের চলাচল বন্ধ করা যায়, সে বিষয়ে মতামত দেওয়ার জন্য রেলের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকদের (জিএম) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত সূত্র বলছে, রেলের কর্মকর্তারা এখনই কিছু ট্রেন কমানোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, গত দুই দিনে এমনিতেই গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলো থেকে যাত্রী চলাচল কমে গেছে। এ ছাড়া ট্রেন চলাচলের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের মধ্যে আতঙ্কও আছে। এই অবস্থায় আগের মতোই ট্রেন চালিয়ে যাওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। তবে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলামসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সংকেত ছাড়া ট্রেন বন্ধ করতে চাইছেন না। তারা মনে করছেন, সরকারের নীতিনির্ধারকদের অবস্থান না জেনে ট্রেন বন্ধ করলে আবার তোপের মুখে পড়তে হয় কি না, সেটা বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে।

রেলওয়ের পরিচালন (অপারেশন) বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা থেকে স্বাভাবিক সময়ে দৈনিক প্রায় ৩০ হাজার টিকিট বিক্রি হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করার পর গত ১৬ ও ১৭ মার্চ এই গড়ের চেয়ে বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এরপর থেকেই টিকিট বিক্রি কমতে থাকে। গতকাল রোববার টিকিট বিক্রি ২০ হাজারের নিচে নেমে গেছে। চট্টগ্রামে টিকিট বিক্রি হয় গড়ে সাড়ে আট হাজার। গতকাল তা সাড়ে পাঁচ হাজারে নেমে এসেছে। রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, জামালপুর ও কিশোরগঞ্জেও টিকিট বিক্রি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ কমে গেছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, সংস্থাটির দুই অঞ্চলে আন্তনগর, মেইল ও লোকাল মিলে ৩৪৮টি ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চারটি মৈত্রী ট্রেন চলে। ভারত ভিসা বাতিল করার কারণে মৈত্রী ট্রেন ১৬ মার্চ থেকেই চলাচল বন্ধ রয়েছে। এখন দেশের ভেতর চলাচলকারী বাকি ৩৪৪টি ট্রেনের মধ্যে কতগুলোর চলাচল বন্ধ রাখা যায়, সে বিষয়ে কাজ করছেন দুই জিএম। আজ সন্ধ্যার মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি পরিকল্পনা রেলের মহাপরিচালকের কাছে প্রেরণ করা হতে পারে।

জানতে চাইলে রেলের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ট্রেন কমানোর বিষয়টি সরকারের নীতিনির্ধারণী বিষয়। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত এলে তারা তা বাস্তবায়ন করবেন। তবে রেল চলাচল কাটছাঁট করতে হলে কোন কোন ট্রেন প্রথমে বন্ধ করা হবে, সে বিষয়ে তাঁরা একটা প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন। তিনি জানান, বর্তমানে ট্রেনের যাত্রী ৩৫ শতাংশের মতো কমে গেছে। ফলে সরকার চাইলে ১০-২০ শতাংশ ট্রেন বন্ধের বিষয়ে নির্দেশনা দিলে যাত্রী চলাচলে সমস্যা হবে না।

রেলের মহাপরিচালক জানান, ট্রেন চালানোর সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস সরবরাহ করা হয়েছে। রেলের সব বিভাগ থেকেই তাদের অত্যাবশ্যকীয় কর্মীদের সুরক্ষা সামগ্রী দিয়েছে।