মৌলভীবাজারে প্রবাসী নারীর মৃত্যুর পর পাঁচটি বাড়ি কোয়ারেন্টিন

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মাস দুয়েক আগে যুক্তরাজ্য থেকে মৌলভীবাজারে আসা এক প্রবাসী নারী গতকাল রোববার (৬৫) মৃত্যুবরণ করেছেন। এরপর করোনা সন্দেহে আজ সোমবার বিকেলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁর বাড়িসহ এলাকার পাঁচটি বাড়িকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে।

তবে মৌলভীবাজার পৌর এলাকার বাসিন্দা ওই নারীর পরিবার দাবি করেছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। তিনি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েই মারা গেছেন। তাঁর জ্বর, সর্দির মতো কোনো উপসর্গ ছিল না।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ প্রশাসন, সিভিল সার্জন কার্যালয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই মাস আগে ওই নারী যুক্তরাজ্য থেকে স্বামীসহ দেশে আসেন। তিনি পৌর শহরের ওই বাড়িতেই থাকতেন। গত রোববার দুপুরে তিনি হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে পরিবারের লোকজন মৃতদেহ নিয়ে বাসায় চলে আসেন।

আজ সোমবার দুপুর দুইটায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কনকপুর ইউনিয়নের স্বামীর বাড়িতে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তিনটার সদর উপজেলার একটি এলাকায় তাঁর স্বামীর প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।

এদিকে আজ সোমবার দুপুর দুটার দিকে পৌর শহরে ওই নারীর বাড়িতে সিভিল সার্জনসহ পুলিশের সদস্যরা যান। সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে সন্দেহ করা হচ্ছে ওই নারীর শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয়ে থাকতে পারে। এই সন্দেহে ওই এলাকার পাঁচটি বাড়িকে হোম কোয়ারেন্টিন করে দেয়ালে স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হয়।

মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র মো. ফজলুর রহমান ওই নারীর স্বামীর বরাত দিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্‌রোগ, রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। গতকাল রোববার হঠাৎ করে অসুস্থ বোধ করলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পথেই তিনি মারা গেছেন। তাঁর সর্দি, কাশি-জ্বর এসব ছিল না।

মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক পার্থ সারথি দত্ত কানুনগো প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রোববার দুপুর একটার দিকে তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল। চিকিৎসক মৃত বলার পরই তারা লাশ নিয়ে গেছেন। রোগীর কোনো হিস্ট্রি জানানো হয়নি।

মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, পৌর শহরের ওই এলাকার একটি বাসায় ইতালি ফেরত একটি ছেলের জ্বর আছে। এ জন্য সতর্কতামূলক পাঁচটি বাসা কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে।

সিভিল সার্জন তওহীদ আহমদ বলেন, ‘পরিবারের লোকজনের সন্দেহজনক আচরণের কারণে বিভিন্ন অ্যাকশন (ব্যবস্থা) নিতে হচ্ছে। বিষয়টি যাচাই-বাছাই চলছে। আমরা মিটিংয়ে বসেছি। পরে ক্লিয়ার করা হবে।’