মতলব উত্তরে বিদেশফেরত ৪৭৯ জন কোথায়

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় সম্প্রতি বিদেশ থেকে বাড়ি ফিরেছেন ৬৪৭ জন। এর মধ্যে ১৬৮ জনের অবস্থান শনাক্ত করা গেছে। উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির অনুসন্ধানে এসব ব্যক্তির অবস্থান ও ঠিকানা নিশ্চিত করা হয়। পরে তাঁদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। বিদেশফেরত বাকি ৪৭৯ জনের অবস্থান সম্পর্কে জানেন না সংশ্লিষ্ট কেউ।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কার্যালয় জানায়, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের তাণ্ডব শুরুর পর বিদেশ থেকে এই উপজেলায় ফিরে আসেন ৬৪৭ জন। ইতালি, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, হংকং, সৌদি আরব, চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে তাঁরা দেশে ফেরেন। এসব ব্যক্তির অবস্থান, নাম ও ঠিকানা শনাক্ত করার জন্য উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি ও এর শাখা কমিটিগুলো পুলিশের সহযোগিতায় অনুসন্ধান চালায়। অনুসন্ধান শেষে উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ১৬৮ জন বিদেশফেরত ব্যক্তির অবস্থান ও ঠিকানা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বাকিরা কোথায় আছেন, তা শনাক্ত করা যায়নি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তার ঠেকাতে তাঁদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা আছে। এসব বিদেশফেরত ব্যক্তি যাতে হোম কোয়ারেন্টিন মেনে চলেন, সে জন্য সবাইকে কঠোর নজরদারি ও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ সদস্য, স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তাকে ওই তদারকি কার্যক্রমে যুক্ত করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, অনেক বিদেশফেরত ব্যক্তি যথাযথভাবে হোম কোয়ারেন্টিন মেনে চলছেন না। প্রশাসনের নজরদারি সত্ত্বেও তাঁরা মার্কেটে, বিপণিবিতান, ব্যাংক ও পোস্ট অফিসে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে মিশছেন। স্বজনদের বাড়িতেও বেড়াতে যাচ্ছেন কেউ কেউ। অনেকে বিদেশ থেকে এসে বাড়িতে থাকছেন না। লুকিয়ে ও পালিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছেন। এতে তাঁরা নিজেদের সর্বনাশ তো করছেনই, এলাকার লোকজনকেও ঝুঁকি ও দুশ্চিন্তায় রেখেছেন। নিজের অবস্থান সম্পর্কে লুকোচুরি না খেলে বিদেশফেরত ব্যক্তিদের উচিত নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে কোয়ারেন্টিনে চলে আসা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুসরাত জাহান মিথেন গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর উপজেলায় ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ১৬৮ জনের মধ্যে পাঁচজনের কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এখনো ১৬৩ জন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এম জহিরুল হায়াত বলেন, বিদেশফেরত ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টিন মেনে চলতে সার্বক্ষণিক তদারকির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তদারকি কমিটি ও থানার পুলিশ কঠোর নজরদারি ও পর্যবেক্ষণে রাখছে। কোয়ারেন্টিন না মানলে তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।