কোয়ারেন্টিন নিয়ে তর্কাতর্কি, পুলিশের বিরুদ্ধে ফেসবুকে অভিযোগ, অতঃপর...

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে সরকারের নির্দেশমতো হোম কোয়ারেন্টিনে না থাকা নিয়ে ইতালিফেরত এক ব্যক্তির সঙ্গে পুলিশের তর্কাতর্কি হয়। পরে ওই ব্যক্তি ফেসবুকে অভিযোগ করেন, পুলিশ তাঁর কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছে। টাকা না দিলে তাঁকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী হিসেবে ঘোষণা দেবে। পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, মিঠামইন উপজেলার এক ইতালি প্রবাসী ৭ মার্চ বাড়ি ফেরেন। কিন্তু তিনি নিয়ম অনুয়ায়ী হোম কোয়ারেন্টিনে না থেকে অবাধে এলাকায় ঘোরাফেরা করতে থাকেন। এলাকাবাসী পুলিশের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করলে ১৩ মার্চ মিঠামইন থানা–পুলিশ তাঁর বাড়িতে যায়। তাঁকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলে পুলিশ। এ নিয়ে তিনি পুলিশের সঙ্গে তর্ক করেন। তর্কাতর্কির একপর্যায়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা তাঁকে বলেন, ‘নিয়ম না মানলে প্রয়োজনে আপনাকে গ্রেপ্তার করে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হবে।’

এরপর ওই ব্যক্তি নিজের ফেসবুকে একটি ভিডিও আপলোড করে অভিযোগ করেন, মিঠামইন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলাম ও মো. কিরণ মিয়া তাঁর কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন। চাঁদা না দিলে তাঁকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে প্রচার করে দেবেন।

এ নিয়ে নানা আলোচনা–সমালোচনার মুখে অষ্টগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজিজুল হককে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ২১ মার্চ তদন্ত শেষে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমানের কাছে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ওই ব্যক্তির অভিযোগ সত্য নয় বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এরপর গত রোববার মিঠামইন থানার এসআই মো. নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে জিডিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। মামলায় ওই প্রবাসীকে প্রধান আসামি করে দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাত আরও তিনজনকে আসামি করা হয়।

মামলার পর গত রোববার রাত ১২টার দিকে বাড়ি থেকে ওই প্রবাসীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল সোমবার বিকেলে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়।

পুরো বিষয় ব্যাখ্যা করতে গতকাল বিকেলে জেলা পুলিশ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান রহমান। তিনি দাবি করেন, পুলিশ ওই প্রবাসীর কাছে কোনো চাঁদা দাবি করেনি। পুলিশের ভারমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য ওই প্রবাসী ফেসবুকে মিথ্যা অভিযোগ করেন। পরে ঘুষ চাওয়ার মিথ্যা তথ্য ও অভিযোগ ফেসবুকে ছড়িয়ে পুলিশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট এবং জনমনে আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগে মামলা হয়।