পিপিইর দাবিতে কর্মবিরতিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা

ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) না পেলে কাজ নয়—এ দাবি সিলেটের বেসরকারি হাসপাতাল জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (জেআরআরএমসি) ১৫০ ইন্টার্ন চিকিৎসকের। দাবি আদায়ে গত সোমবার থেকে তাঁরা কর্মবিরতিতে নেমেছেন।

কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিন আজ মঙ্গলবার ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বরাবর এক লিখিত আবেদনে জানিয়েছেন, পিপিই ছাড়া চিকিৎসা কার্যক্রমে অংশ নেওয়ায় দুজন ইন্টার্ন চিকিৎসক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় তাঁরা পিপিই ছাড়া চিকিৎসা কার্যক্রমে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কলেজ অধ্যক্ষ বরাবর ওই লিখিত আবেদনে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা তাঁদের তিন দফা দাবি পেশ করেছেন। দাবিগুলো হলো হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সবাইকে পিপিই সরবরাহ করতে হবে। সেবায় নিয়োজিত কেউ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত সন্দেহ হলে তাঁর দায়দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। রোগীর সঙ্গে হাসপাতালে আসা দর্শনার্থী নিয়ন্ত্রণ করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।
জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সিলেটের প্রথম বেসরকারি হাসপাতাল। এখানে প্রতিদিন গড়ে ছয় হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। ইন্টার্ন চিকিৎসকের দাবি, এই ছয় হাজার রোগীর প্রাথমিক দেখভাল তাঁদেরই করতে হয়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় পিপিই সরঞ্জাম দেওয়ার জন্য প্রায় এক সপ্তাহ আগে হাসপাতাল ও কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর সম্প্রতি শুধু জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদের মধ্যে পিপিই সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে কর্মরত ১৫০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসককে কোনো পিপিই দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো কিছু না বলায় গত সোমবার থেকে তাঁরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইন্টার্ন চিকিৎসক প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালের দুজন ইন্টার্ন চিকিৎসকের মধ্যে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। তাঁরা এখন নিজেদের বাসায় কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। এ নিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মধ্যে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আবিদ হোসেন গতকাল দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পিপিই-স্বল্পতা শুধু আমাদের এখানে নয়, সব হাসপাতালেই রয়েছে। আমাদের এখানে যেগুলো ছিল, সেগুলো আমরা জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদের দিয়েছি। চাহিদা অনুযায়ী পিপিই পাওয়ামাত্র ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দেওয়া হবে।’
ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা কর্মবিরতিতে থাকায় হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম কীভাবে চলছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ছিল প্রতিদিন ছয় হাজার। এখন তা কমে দুই হাজারে দাঁড়িয়েছে। তাই সেবা কার্যক্রমে কোনো ব্যাঘাত ঘটছে না। আমরা তাঁদের বলেছি যে পিপিই পাওয়ামাত্র সরবরাহ করা হবে। এর বাইরে আমাদের কিছু করার নেই।’
দুজন ইন্টার্ন চিকিৎসকের করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেওয়া প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখব।’