রাজশাহীতে বন্ধের আগের দিনও ক্রেতা নেই বিপণিবিতানে

বিপণিবিতান বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগের দিনে ব্যবসায়ীরা দোকান খুলে বসলেও দেখা পাননি ক্রেতার। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী নগরের আরডিএ মার্কেটে। ছবি: শহীদুল ইসলাম
বিপণিবিতান বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগের দিনে ব্যবসায়ীরা দোকান খুলে বসলেও দেখা পাননি ক্রেতার। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী নগরের আরডিএ মার্কেটে। ছবি: শহীদুল ইসলাম

সকাল থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত ক্রেতার অপেক্ষায় ছিলেন রাজশাহী নগরের আরডিএ মার্কেটের পোশাক বিক্রেতা শাওন আলী। কারও দেখা পেলেন না। জানালেন, গত এক সপ্তাহ ধরে এ অবস্থা। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে আগামীকাল বুধবার থেকে বন্ধ হয়ে যাবে বিপণিবিতান। তাই আজ মঙ্গলবার সকাল সকাল এসে দোকান খুলেছিলেন শাওন। কিন্তু তাতে তেমন লাভ হয়নি।

রাজশাহী নগরের বিপণিবিতানগুলোতে ঘুরে আজ এই চিত্র চোখে পড়ে। নগরের সবচেয়ে বড় বিপণিবিতান আরডিএ মার্কেটের বেশির ভাগ দোকান বন্ধ ছিল। দু-একটি খোলা থাকলেও ক্রেতাশূন্য ছিল। নগরের নিউ মার্কেটেও একই অবস্থা। অথচ এই দোকানগুলোতে স্বাভাবিক সময়ে অনেক ক্রেতার ভিড় থাকে। ব্যবসায়ী ও বিক্রেতারা অলসভাবে বসেছিলেন।

করোনাভাইরাসের প্রভাবে ক্রেতা না থাকায় বন্ধ ছিল অনেক দোকানপাট। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী নগরের আরডিএ মার্কেটে।  ছবি: শহীদুল ইসলাম
করোনাভাইরাসের প্রভাবে ক্রেতা না থাকায় বন্ধ ছিল অনেক দোকানপাট। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী নগরের আরডিএ মার্কেটে। ছবি: শহীদুল ইসলাম

করোনাভাইরাসের প্রভাবে গতকাল শেষ দিন কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কেনাকাটায় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় থাকলেও অন্য পণ্য কিনতে বিপণিবিতানে খুব বেশি মানুষকে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, এক সপ্তাহ ধরে তাঁদের তেমন কোনো বিক্রি নেই। কয়েক দিন অনেকেই দোকান বন্ধ রেখেছিলেন। আজ শেষ দিন বলে ক্রেতার আশায় অনেকেই দোকান খুলেছিলেন। কিন্তু বিক্রি হয়নি। ফুটপাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাইরে ব্যবসা করা বিক্রেতাদেরও বিক্রি নেই।

আরডিএ মার্কেটের কাপড়ের দোকানের স্বত্বাধিকারী ওমর ফারুক বলেন, বিক্রি নেই বলে তিন দিন ধরে তিনি দোকান বন্ধই রেখেছিলেন। আজ শেষ দিন বলে তিনি দোকানে এসেছেন। সবকিছু গুছিয়ে রেখে যাচ্ছেন। আবার কবে দোকান খুলতে পারবেন, তা নিয়ে তাঁর সংশয় রয়েছে।

বিপণিবিতান বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগের দিনে ব্যবসায়ীরা দোকান খুলে বসলেও দেখা পাননি ক্রেতার। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী নগরের আরডিএ মার্কেটে। ছবি: শহীদুল ইসলাম
বিপণিবিতান বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগের দিনে ব্যবসায়ীরা দোকান খুলে বসলেও দেখা পাননি ক্রেতার। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী নগরের আরডিএ মার্কেটে। ছবি: শহীদুল ইসলাম

আরডিএ মার্কেটের ইসতিয়াক আহমেদ নামের এক বিক্রেতা জানান, তিনি দোকানে মাসিক বেতনে কাজ করেন। এখন মার্কেট বন্ধ হয়ে গেলে এ মার্কেটের কয়েক হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বেন। এতে তাদের আয়–রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে। যদি সরকার বা মালিকপক্ষ বিষয়টি দেখত, তাহলে খুব ভালো হতো। রুবেল হাসান নামে নিউ মার্কেটের আরেক দোকান কর্মচারী বলেন, তাঁর কিস্তি দিতে হয় প্রতি মাসে। এখন কর্মহীন হয়ে পড়লে কী খাবেন এবং কীভাবে কিস্তি চালাবেন, তা নিয়েই চিন্তায় আছেন।

২২ মার্চ বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি সিদ্ধান্ত নেয় ২৫ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে কাঁচাবাজার, ওষুধের দোকান ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান খোলা থাকবে। আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটির ঘোষণার পর দোকান মালিক সমিতি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন, তারা সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত শপিং মল বন্ধ রাখবেন।