করোনা নিরাময়ের ওষুধ বিক্রির দায়ে কবিরাজের কারাদণ্ড

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের ওষুধ বিক্রি করার অপরাধে কথিত কবিরাজ আলতাফ ফকিরকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। শরীয়তপুর, ২৬ মার্চ। ছবি: সংগৃহীত
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের ওষুধ বিক্রি করার অপরাধে কথিত কবিরাজ আলতাফ ফকিরকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। শরীয়তপুর, ২৬ মার্চ। ছবি: সংগৃহীত

‘ওষুধ খেলে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে’—এমন প্রচার চালিয়ে শরীয়তপুর সদরের মনোহর বাজার বাসস্ট্যান্ডে বসে ওষুধ বিক্রি করছিলেন আলতাফ ফকির (৫৫) নামে এক কথিত কবিরাজ। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে তাঁকে আটক করেন শরীয়তপুর সদরের আংগারিয়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মিন্টু মন্ডল।

গতকাল বৃহস্পতিবারই সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহাবুর রহমান শেখ ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাঁকে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। রাতে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে জেলা কারাগারে পাঠায়।

আংগারিয়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মিন্টু মন্ডল জানান, সদর উপজেলার চরপাতাং এলাকার বাসিন্দা আলতাফ ফকির। শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কের মনোহর বাজার বাসস্ট্যান্ডের ফুটপাতে বসে বিভিন্ন গাছপালার শিকড় ও লতাপাতার রস বিক্রি করতেন। সম্প্রতি তিনি সেখানে পেট্রল পাম্পের সামনে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে ওই ব্যবসার পরিসর বাড়ান। গত তিন-চার দিন ধরে বিভিন্ন গাছের পাতার রসের সঙ্গে ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে করোনাভাইরাস নিরাময়ের ওষুধ বলে বিক্রি করতে থাকেন। এমন অভিযোগ পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁকে মনোহর বাজার এলাকা থেকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁকে এক মাসের কারাদণ্ড দেন।

ডামুড্যা উপজেলার মডেরহাট এলাকার বাসিন্দা রাজিব হোসেন বলেন, ‘লোকমুখে জানতে পারি আলতাফ ফকির নামে এক ব্যক্তি করোনাপ্রতিষেধক বিক্রি করছেন। তখন আমি তাঁর মুঠোফোনে ফোন করে বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই। তিনি আমাকে জানান, জ্বর, ঠান্ডা, কাশিসহ বিভিন্ন রোগের ওষুধ তিনি বিক্রি করেন। সেই সঙ্গে করোনা নিরাময়ের ওষুধও প্রস্তুত করেছেন তিনি। যে কেউ চাইলেই সেই ওষুধ দিতে পারবেন। বিষয়টি আমার কাছে প্রতারণা মনে হওয়ায় পুলিশকে জানাই। আমার সঙ্গে ওই কবিরাজের মুঠোফোনের কথোপকথনের রেকর্ড পুলিশকে পৌঁছে দিই।’

এ বিষয়ে ইউএনও মাহাবুর রহমান শেখ বলেন, কথিত ওই কবিরাজ করোনা নিরাময়ের ওষুধ বিক্রি করছেন—এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের অভিযানে আটকের পর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গাছের ও লতাপাতার রসের সঙ্গে ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে ওষুধ বানিয়ে বিক্রি করার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন। করোনাভাইরাস প্রতিষেধক বলে বিক্রি করায় সাধারণ মানুষ প্রতারিত হয়েছেন। ফলে তাঁকে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের প্রতারকদের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।