লোহাগড়ায় বিদেশফেরত ৬০৩ জনকে খুঁজছে প্রশাসন

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় বিদেশফেরত ৬০৩ জনকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন। গত জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসে তাঁর দেশে ফিরেছেন।

আজ শুক্রবার উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুকুল কুমার মৈত্র বলেন, বিভিন্ন বিমানবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে তাঁরা দেশে এসেছেন। বন্দরগুলো থেকে তালিকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে তালিকা পাঠানো হয়েছে। ইউএনও কার্যালয় থেকে এ তালিকা পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানদের গত বৃহস্পতিবার দেওয়া হয়েছে। তাঁরা এ নিয়ে কাজ করছেন। বিশেষ করে মার্চ মাসে যাঁরা বিদেশ থেকে এসেছেন, তাঁদের হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে কাজ চলছে।

ইউএনও কার্যালয় সূত্র জানায়, বিদেশফেরত ব্যক্তিদের মধ্যে ভারত থেকে ৪৮৮ জন, সৌদি আরব থেকে ২৪ জন, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া থেকে ১২ জন করে, আরব আমিরাত থেকে ১১ জন, সিঙ্গাপুর থেকে ৯ জন, কুয়েত থেকে ৮ জন, ওমান ও অস্ট্রেলিয়া থেকে ৫ জন করে, কাতার থেকে ৪ জন, যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আফ্রিকা, বাহরাইন ও মালদ্বীপ থেকে ৩ জন করে, ইতালি, চীন ও গ্রিস থেকে ২ জন করে এবং স্পেন, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, জর্ডান, শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড, মিসর থেকে ১ জন করে দেশে এসেছেন।

উপজেলা প্রশাসন জানায়, ৬০৩ জনের মধ্যে মার্চ মাসে দেশে এসেছেন ১৬৬ জন। মার্চ মাসে পৌর এলাকার বাসিন্দা ৫৯ জন, লাহুড়িয়া ইউনিয়নের ২০ জন, নলদী ইউনিয়নের ১৯ জন, জয়পুর ইউনিয়নের ১৬ জন, ইতনা ইউনিয়নের ১৪ জন, নোয়াগ্রাম ও দিঘলিয়া ইউনিয়নে ৭ জন করে, শালনগর ইউনিয়নের ৬ জন, লোহাগড়া ইউনিয়নের ৫ জন, লক্ষ্মীপাশা ও কাশিপুর ইউনিয়নের ৪ জন করে, কোটাকোল ইউনিয়নে ৩ জন এবং মল্লিকপুর ইউনিয়নে ২ জন দেশে ফেরেন।

এদিকে স্থানীয় লোকজন জানান, অনেক বিদেশফেরত ব্যক্তিই বাড়িতে থাকছেন না। বাজারঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আড্ডা দিচ্ছেন। তবে স্থানীয় লোকজন বিদেশফেরত ব্যক্তিদের ঘরে রাখতে সচেতন রয়েছেন। কাউকে কাউকে বোঝাচ্ছেন, কেউ কেউ প্রশাসনে খবর দিচ্ছেন, আবার ফেসবুকেও পোস্ট দিচ্ছেন।

ইউএনও মুকুল কুমার বলেন, তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদেশফেরত ব্যক্তিদের বলে এসেছে বাড়িতে থাকতে। এ বিষয়ে নলদী ইউপির চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেশির ভাগ মানুষই ভারত থেকে এসেছেন। তাঁরা ডাক্তার দেখাতে মাঝেমধ্যে ভারত যান। চৌকিদারদের বলা হয়েছে, ঘরে থাকার জন্য তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলতে। আমি নিজেও যাচ্ছি বাড়ি বাড়ি।’

নোয়াগ্রাম ইউপির চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিদেশফেরত ব্যক্তিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমি নিজেই বাজার করে দেওয়ার কথা বলেছি। পাঁচটি বাড়িতে লাল পতাকা টাঙিয়েছি। এ বিষয়ে ইউপির কার্যক্রমের প্রতিবেদন প্রতিদিন ইউএনওকে দিচ্ছি।’

লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, দেশে ঢুকলেও বিদেশফেরত সবাই এখনো বাড়িতে আসেনি। পুলিশ থেকে ব্যাপকভাবে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। শতভাগ হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে কাজ করা হচ্ছে।