দিনাজপুরে মানুষকে ঘরে রাখতে পুলিশের অভিযান

বিকেল পাঁচটা। দিনাজপুর শহরের অদূরে পুনর্ভবা নদীর পাড়ে কাঞ্চন সেতুর দুই পাশে মানুষের মেলা। সেতুর ওপরে দাঁড়িয়ে তখন জনা ত্রিশ পুলিশ। হুইসেল দিয়ে যাচ্ছে অনবরত। কিন্তু সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই কারও। অগত্যা সেতুর নিচে নেমে দৌড়ানি দিলে আড্ডারত মানুষের ভোঁ-দৌড়। পুলিশ ওপরে উঠে এলে আবার মাঠ ভর্তি হতে শুরু করল। এ যেন চোর-পুলিশ খেলা।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শহরে সব ধরনের যানবাহনসহ প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ মানুষের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।

অথচ নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে মানুষকে চলাচল করতে দেখা যায়। সকালের দিকে শহরে লোকসমাগম কম থাকলেও বিকেল থেকে বাড়তে শুরু করে। বিশেষ করে শহরের বাহাদুর বাজার, লিলির মোড়, বালুয়াডাঙ্গা, রামনগর, কাঞ্চনঘাট এলাকাসহ স্টেশনের আশপাশে বাড়ির বাইরে মানুষের আড্ডা জমে ওঠে। কাঞ্চনঘাটে গোল হয়ে বসে চলে তাস খেলা, কেউবা মুঠোফোনে লুডু খেলা নিয়ে ব্যস্ত।

এই পরিস্থিতিতে মানুষকে বাড়ির বাইরে বের না হতে বিশেষ অভিযান শুরু করে দিনাজপুরের পুলিশ। বিকেল চারটা থেকে রাত পর্যন্ত পুলিশের সদস্যরা শহরের অলিগলিতে দল বেঁধে হুইসেল বাজিয়ে অভিযান চালিয়েছে। চলতি পথে মানুষকে থামিয়ে বাড়ির বাইরে বের হওয়ার কারণ জানতে চাইলে মিলেছে নানা অজুহাত।

২৬ বছর বয়সী যুবক সুমন শাহরিয়ার এই প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আরে ভাই, আর কতক্ষণ শুয়ে–বসে থাকা যায় বলেন?’

দিনাজপুরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাফফর আহমদ বলেন, ‘কীভাবে পারা যায় বলেন? মানুষ যদি নিজে সচেতন না হয়, তাহলে কেমন করে কী করবেন? মেরে ধরে কি মানুষকে ঘরে রাখা সম্ভব।’ তিনি জানান, দিনাজপুর পুলিশ লাইনস থেকে শুরু করে সব শাখার পুলিশ সদস্যরা মাঠে কাজ করছেন। নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। কিন্তু সারাক্ষণ তো আর এক জায়গায় পুলিশ থাকতে পারছে না।