সড়কের পাশে পড়ে ছিলেন ইউরোপীয় নাগরিক

অচেতন ব্যক্তিকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলতে এগিয়ে আসেন দুই পথচারী। দূরে দাঁড়িয়ে পুলিশ। সিলেট, ২৮ মার্চ। ছবি: প্রথম আলো
অচেতন ব্যক্তিকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলতে এগিয়ে আসেন দুই পথচারী। দূরে দাঁড়িয়ে পুলিশ। সিলেট, ২৮ মার্চ। ছবি: প্রথম আলো

সিলেট নগরের মিরবক্সটুলা সড়কের পাশে ইউরোপীয় এক নাগরিক পড়ে ছিলেন। করোনাভাইরাসের আতঙ্কে তাঁকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেননি কোনো পথচারী। তবে তাঁরা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে খবর দেয় সিভিল সার্জনকে। পরে হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।

আজ শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানায়, তাঁর নাম মার্ক (৪৫)। তিনি ফিনল্যান্ডের নাগরিক। প্রায় দুই মাস আগে বাংলাদেশে এসেছেন। দেড় মাস ধরে সিলেট নগরের হাওয়াপাড়া এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছেন। অসুস্থ বোধ করায় তিনি হাসপাতালের দিকে যাচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সিলেট নগরের হাওয়াপাড়া এলাকা থেকে চৌহাট্টার দিকে যাচ্ছিলেন ওই বিদেশি ব্যক্তি। পথে মিরবক্সটুলা সড়কের পাশে একটি বন্ধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে গিয়ে পড়ে যান। এ সময় পথচারীরা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি সিভিল সার্জনকে জানায়। পরে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের একটি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে গিয়ে ফিনল্যান্ডের ওই নাগরিককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

সিলেট কোতোয়ালি থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) নির্মলেন্দু চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, করোনাভাইরাসের আতঙ্ক এখন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। পথচারীরা ভয়ে ওই নাগরিকের পাশে যাননি। অনেকে মুঠোফোন দিয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণে ব্যস্ত ছিলেন।

তবে ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘শুধু আমরা নই, ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়া পুলিশের কোনো সদস্য ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে হাত দেননি। ওই ব্যক্তিকে শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে নিয়ে যেতে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে একজন চালক আসেন। এ সময় দুজন পথচারী ওই ব্যক্তিকে গাড়িতে তুলতে এগিয়ে যান। কিন্তু অসাবধানতাবশত সড়কে পড়ে যান ওই ব্যক্তি। পরে আবার তাঁকে গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

সিলেটের সিভিল সার্জন প্রেমনন্দ মন্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ফিনল্যান্ডের নাগরিকের শারীরিক কী সমস্যা রয়েছে, সেটি এখনো জানা যায়নি। তাঁকে শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ওই হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মার্ক সিলেটে এসে তাদের হোটেলে এক সপ্তাহ ছিলেন। এরপর চট্টগ্রামে যান। সেখান থেকে এ মাসের ২০ তারিখ সিলেটে ফিরে তাদের এখানেই ওঠেন। তাঁকে হোটেল থেকে বের হতে বারণ করা হয়েছিল। কিন্তু আজ তিনি বেরিয়েছেন।