বরিশালে ২ ফটোসাংবাদিককে পুলিশের মারধরের অভিযোগ

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বরিশালে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকারি প্রচারের ছবি তুলতে গিয়ে স্থানীয় দুই ফটোসাংবাদিক পুলিশের মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন আহত দুই ফটোসাংবাদিক। তাদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বরিশাল প্রেসক্লাব, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি, বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। নগর পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে ফেরার পথে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ওই দুই সাংবাদিক পুলিশের নির্যাতনের শিকার হন। প্রথমে তাঁরা বিষয়টি জানান নি। পরে গতকাল শনিবার রাতে তাঁরা ঘটনাটি প্রকাশ করেন। এই দুই ফটোসাংবাদিক হলেন বরিশালের আঞ্চলিক দৈনিক দেশ জনপদ–এর সাফিন আহমেদ ও দৈনিক দখিনের মুখ–এর নাসির উদ্দিন।

সাফিন আহমেদের ভাষ্য, পুলিশের পিটুনিতে তাঁরা হতভম্ব হয়ে পড়েন। লোকলজ্জায় প্রথমে বিষয়টি তাঁরা প্রকাশ করেননি। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হলে গতকাল সন্ধ্যায় সহকর্মীদের বিষয়টি খুলে বলেন তাঁরা। তিনি দাবি করেন, বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারেফ হোসেন গত শুক্রবার বিকেলে কর্ষকাঠী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় করোনা নিয়ে প্রচার চালাতে যান। তাঁরা দুজন এর খবর ও ছবি সংগ্রহ করতে যান। কিন্তু দেরি হয়ে যাওয়ায় তাঁরা সেই প্রচার কার্যক্রম না পেয়ে শহরের দিকে ফিরছিলেন। ফেরার পথে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ইউএনওর গাড়ির পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন। এরপর তাদের লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করেন। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও তাঁরা লাঠিপেটা করতে থাকেন।

সাফিন আহমেদ বলেন, ঘটনার সময় তাঁরা নিয়মানুযায়ী মাস্ক পরা ছিলেন। তাদের সঙ্গে ক্যামেরাও ছিল। যে পুলিশ সদস্যরা তাদের পেটান, তাদের মুখে মাস্ক ছিল। এ কারণে তাঁরা কাউকে চিনতে পারেননি। পিটুনিতে তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থান ফুলে গেছে এবং ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। শহরে এসে তাঁরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ ব্যাপারে ইউএনও মো. মোশারেফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ঘটনাটি আহত ফটোসাংবাদিক সাফিনের কাছ থেকে শুনেছেন। এ রকম ঘটনা ঘটে থাকলে তা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন, 'সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও সম্মানের জন্য সম্ভব সবকিছু করা হবে। আমাদের অফিসারের অবহেলা থাকলে তাঁর শাস্তি হবে। অন্য কেউ করলেও আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।'

বরিশাল নগর পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, সংকটময় পরিস্থিতিতে সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করার নির্দেশনা রয়েছে পুলিশের প্রতি। এরপরও সাংবাদিকের সঙ্গে অসদাচরণের ঘটনা ঘটলে জড়িতদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।