রাবি ক্যাম্পাসটা এখন শুধুই তাদের

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের গবেষণা পুকুরে পাখিদের বিচরণ। ছবি: শফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের গবেষণা পুকুরে পাখিদের বিচরণ। ছবি: শফিকুল ইসলাম, রাজশাহী

গাছে গাছে নতুন পাতা। পাখিরা গাইছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্জন ক্যাম্পাসের পুরোটা জুড়ে তাদের রাজত্ব। মার্চের এই সময়ে ক্যাম্পাস থাকে শিক্ষার্থীদের কলকাকলিতে ভরা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ছুটি ঘোষণা করায় ক্যাম্পাস এখন ফাঁকা। সেই সুযোগে প্রকৃতি যেন নিজের মতো সেজেছে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ। মাত্র ১০ দিনে ক্যাম্পাসটা কী সুন্দরই না হয়েছে! গাছে গাছে কচিপাতা। সবুজ আর সবুজ। সেই সবুজের আড়াল থেকে উঁকি দিচ্ছে কাঠবিড়ালি আর নানা জাতের পাখি। কান পাতলে কেবল পাখিদের কিচিরমিচিরই শোনা যায়।

ক্যাম্পাস খোলা থাকলে টুকিটাকি চত্বর ঘিরে জমে জমজমাট আড্ডা। কেউ কেউ গিটারে সুর তুলতেন। সঙ্গী হতেন আরও অনেকে। এখন এসবের কিছুই নেই। সে স্থান যেন নিয়ে নিয়েছে পাখির দল। কাজলা গেট হয়ে ঢুকতেই চোখে পড়ল জুবেরী মাঠের পাশে নির্মাণাধীন শেখ রাসেল স্কুল। মাঠে পড়ে আছে ইট-বালি। শুধু মনে হচ্ছে, মানুষই উধাও হয়ে গেছে। প্যারিস রোডটা খালি পড়ে আছে। কেউ বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে ছবি বা সেলফি তুলছেন না।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড ফাঁকা পড়ে আছে। ছবি : শফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড ফাঁকা পড়ে আছে। ছবি : শফিকুল ইসলাম, রাজশাহী

রাকসু ভবন, পাশে ক্যাফেটেরিয়া, শহীদ মিনারও একা হয়ে আছে। তবে রাকসু ভবনের পাশে লিচু গাছটার গায়ে কাঠবিড়ালী রাজত্ব করছে। নিজেদের মতো খেলছিল।

ক্যাম্পাসের উত্তর দিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবন ছাড়িয়ে হেঁটে যেতেই শব্দ শোনা গেল। সেই শব্দ যেন একা ক্যাম্পাসকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিরা পুকুরের শেষ প্রান্তে রাবেয়া তাপসী হলের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাছে বসে আছে। নিচেই স্বচ্ছ সবুজ পানিতে হাজারো পাখির ঝাঁপাঝাঁপি।

ফিশারিজ বিভাগের গবেষণার পুকুরটা পার হয়ে চারুকলা অনুষদের দিকে এগোতেই আরেকবার থামতে হলো। গাছে গাছে ঝুলে আছে বাঁদুরের দল। গাছ, পাখি আর প্রাণী মিলে নিজেদের ক্যাম্পাসে নিজেদের মতো সময় কাটাচ্ছে। এমন সুযোগ খুব বেশি যে তাদের জীবনে আসে না!