করোনা ইউনিটে মারা যাওয়ায় আতঙ্ক, ২৮ বাড়ি কোয়ারেন্টিন

বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে পটুয়াখালীর এক ব্যক্তি মারা যাওয়ার ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসন ওই ব্যক্তির নিজের গ্রাম ও সদর উপজেলায় শ্বশুরবাড়ি এলাকায় ২৮টি বাড়ি কোয়ারেন্টিন ঘোষণা করে লাল পতাকা টানিয়ে দিয়েছে। ওই ব্যক্তিকে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় নিজ গ্রামেই দাফন করা হবে।
মৃত ব্যক্তির পারিবারিক সূত্র জানায়, তিনি বরিশালে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন। ১০ দিন আগে বাড়ি আসেন। জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা নিয়ে গত শুক্রবার সকালে শ্বশুরবাড়িতে যান। পরদিন আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালে যান। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে দ্রুত বরিশালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। তাৎক্ষণিক তাঁকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রথমে মেডিসিন ওয়ার্ডে এবং পরে করোনা ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। আজ রোববার সকালে তিনি মারা যান।
পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ আবদুল মতিন প্রথম আলোকে বলেন, ওই ব্যক্তি জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। অবস্থা খুব অবনতির দিকে যাচ্ছিল। এই অবস্থায় বরিশালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের এখানে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের কোনো কিট নেই। তবু রোগীর লক্ষণ দেখে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’ তিনি আরও বলেন, এই রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) জানানো হয়েছে। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করা হবে।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সকালেই পুলিশের একটি দল মৃত ব্যক্তির শ্বশুরবাড়িসহ আশপাশের ২৫টি বাড়ি চিহ্নিত করেছে এবং কোয়ারেন্টিন ঘোষণা করে লাল নিশানা টানিয়ে দিয়েছে। মাইকিং করে এলাকার লোকজনকে আতঙ্কিত না হয়ে নিয়ন্ত্রিতভাবে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
এদিকে মৃত ব্যক্তির লাশ বাড়িতে আনা হচ্ছে—এই খবরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান আবু জাফর খান জানান, এলাকার লোকজন খবর পেয়ে আগে থেকেই ওই বাড়িসহ আশপাশের এলাকায় চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে লোকজনকে নিরাপদে থাকতে বলা হচ্ছে।
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ মো. রফিকুল ইসলাম জানান, এলাকার লোকজনকে আতঙ্কিত না হতে বলা হচ্ছে। মৃত ব্যক্তির বাড়িসহ তিনটি বাড়ি কোয়ারেন্টিন ঘোষণা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের লোকেরা আইইডিসিআরের নিয়ম অনুসরণ করে ওই ব্যক্তির লাশ দাফন করার ব্যবস্থা করবেন।