শ্রমজীবী মানুষকে সহায়তায় অনুকরণীয় অনন্য উদ্যোগ

বাড়ি বাড়ি গিয়ে শ্রমজীবী মানুষের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। কুন্দশী গ্রাম, লোহাগড়া, নড়াইল, ৩০ মার্চ। ছবি: প্রথম আলো
বাড়ি বাড়ি গিয়ে শ্রমজীবী মানুষের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। কুন্দশী গ্রাম, লোহাগড়া, নড়াইল, ৩০ মার্চ। ছবি: প্রথম আলো

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ১১ জন শিক্ষার্থী। চোখের সামনে দেখছিলেন করোনাভাইরাসের কারণে নিজ গ্রামের প্রায় অর্ধশত শ্রমজীবী মানুষ বিপাকে পড়েছেন। কেউ দিনমজুর, কেউ চায়ের দোকানি, কেউবা ভ্যানচালক, জেলে ও পাল সম্প্রদায়ের মানুষ। ওই শিক্ষার্থীদের উপলব্ধি হলো, খাদ্য সহায়তা না পেলে অসহায় মানুষগুলোর বেঁচে থাকাই কঠিন। গ্রামের বাসিন্দারা যে যেখানে প্রতিষ্ঠিত আছেন, তাঁদের নজরে আনতে লাগলেন বিষয়টি। এরপর ওই শিক্ষার্থীদের কাছে টাকা পাঠাতে লাগলেন তাঁরা। সেই টাকায় কেনা খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষগুলোর হাতে।

নড়াইলের লোহাগড়া পৌর এলাকার কুন্দশী গ্রামে এ উদ্যোগ নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার এমন ৫৫টি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন তাঁরা। সহায়তার মধ্যে ছিল চাল, তেল, আটা, ডাল, আলু, পেঁয়াজ ও সাবান। উদ্যোগী ওই শিক্ষার্থীরা হলেন কাজী আরিফ, আরমান চৌধুরী, রাজু কাজী, সৌরভ বিশ্বাস, নিলয় বিশ্বাস, মেহেদী, জ্যোতি, ফাহিম, নাইম, শাহরিয়ার ও জনি। তাঁরা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এখন গ্রামে আছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাজী আরিফ বলেন, ‘আমাদের এ উদ্যোগ দেশের প্রত্যেকটি গ্রাম ও মহল্লার জন্য অনুকরণীয় মডেল হতে পারে। বর্তমানে যে যার মতো করে শ্রমজীবী মানুষকে সহায়তা দিচ্ছে। সেখানে কোনো সমন্বয় নেই। এতে কেউ একাধিকবার সহায়তা পাচ্ছে, কেউ পাচ্ছে না। আমরা গ্রামের সব শ্রমজীবী মানুষের তালিকা করেছি। মোট ৫৫ জনকে পেয়েছি।’

কাজী আরিফের উপলব্ধি, দেশের প্রায় প্রতিটি গ্রাম ও মহল্লাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থী আছেন। তাঁরা এভাবে উদ্যোগ নিলে, সেই গ্রামের বাসিন্দা যারা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠিত আছেন সবাই এগিয়ে আসবেন। ফলে, চরম এই দুর্দিনের সময়ে নিজ গ্রামের অসহায় মানুষগুলো রক্ষা পাবে।