সেই পেঁয়াজ এখন মিলছে ২০-২৫ টাকায়

কাঁচাবাজারে পণ্য উঠেছে। নেই কেবল ক্রেতার ভিড়। তাই কমেছে দাম। বাহাদুর বাজার, দিনাজপুর শহর, ৩০ মার্চ। ছবি: প্রথম আলো
কাঁচাবাজারে পণ্য উঠেছে। নেই কেবল ক্রেতার ভিড়। তাই কমেছে দাম। বাহাদুর বাজার, দিনাজপুর শহর, ৩০ মার্চ। ছবি: প্রথম আলো

বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ১৮০ থেকে ২৫০ টাকায় উঠেছিল বেশি আগের কথা নয়। সেই পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে। শুধু পেঁয়াজ নয়, সাম্প্রতিক সময়ে করোনাভাইরাসের আতঙ্কে কাঁচাবাজারে প্রায় সব পণ্যের দামই কমেছে এক-তৃতীয়াংশের মতো। এই চিত্র দিনাজপুরের। ব্যবসায়ীরা বলছেন, যানবাহন চলছে না। তাই খাদ্যপণ্য বাইরে নেওয়া যাচ্ছে না। আবার স্থানীয় বাজারেও ক্রেতা কম। ফলে এই অবস্থা হয়েছে।

আজ সোমবার সকালে দিনাজপুর শহরের সবচেয়ে বড় বাহাদুর বাজার ঘুরেছেন এই প্রতিবেদক। বাজারে ক্রেতার ভিড় ছিল না। কেবল ছিল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের হাঁকডাক—‘আসেন ভাই, আসেন বেগুন ২ কেজি ১০ টাকা, মরিচ ১০ টাকা, পেঁয়াজ মাত্র ২০ টাকা।’ পাইকারদের আড়তগুলো নিরুত্তাপ। মাঝেমধ্যে দু-একজন ক্রেতা আসছিলেন, প্রয়োজনমতো পণ্য কিনে চলে যাচ্ছেন।

বাহাদুর বাজারে খুচরায় প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭ থেকে ৮ টাকা কেজি দরে। শিম ও টমেটো ১০ টাকা, কাঁচা মরিচ, গাজর, করলা, আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে। লাউ প্রতিটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, বাঁধাকপি জোড়া ১৫ টাকা, শাকের আঁটি ৩ থেকে ৫ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহেও এসব পণ্যের দাম দাম যা ছিল, এখন তার অর্ধেকেরও কমে বিক্রি করতে হচ্ছে। পাইকারি বাজারে এসব পণ্যের দাম প্রতি কেজিতে আরও ৩ থেকে ৪ টাকা কমে পাচ্ছেন ক্রেতারা।

চিরিরবন্দর গাবুড়া এলাকা থেকে চার মণ ক্ষীরা নিয়ে সকাল সাটায় বাহাদুর বাজারে এসেছেন কৃষক মুন্নাফ (৪২)। জানালেন, দুই বিঘা জমিতে ক্ষীরার আবাদ করেছেন তিনি। ভেবেছিলেন, গরম পড়া শুরু করল। এখন ক্ষীরার দাম ভালো হবে। কিন্তু সেই সময় এমন একটা পরিস্থিতিতে পড়লেন। ক্ষীরা এখন ১০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। অথচ সপ্তাহ খানেক আগেও এই শসা বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে।

ব্যবসায়ীরা তবু আশায় বুক বেঁধে আছেন। তাঁরা বলছেন, গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হলেই সবজির দাম বেড়ে যাবে। বাহাদুর বাজারের নাসির ট্রেডার্সের আড়তদার মানিক হোসেন বলেন, বাজারে পণ্য উঠছে বেশি। কেউ কেউ আছেন ২ কেজির জায়গায় ৫ কেজি কিনছেন। কিন্তু অপচনশীল এবং কয়েক দিন ফ্রিজে রাখা যায়—এমন পণ্য কিনছেন। জোগান বেশি চাহিদা কম। সুতরাং দাম না কমার অবকাশ নেই।