হৃদ্রোগে মৃত্যু, তবু শ্রমিকের লাশ দাফনে আপত্তি

হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এক ব্যক্তি। এরপর লাশ দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারেন, এমন আশঙ্কায় দাফনে বাধা দেন এলাকার লোকজন। তবে ওই ব্যক্তি করোনাভাইরাসে মারা যাননি, স্বাস্থ্য বিভাগের এমন আশ্বাসের পর পুলিশের উপস্থিতিতে লাশ দাফন করা হয়। রাজশাহীর বাগমারায় এ ঘটনা ঘটেছে।

মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম আবদুল মান্নান (৪৬)। তিনি ইটভাটা শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। বাড়ি উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নের বাজেকোলা গ্রামে।

পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ইটভাটার শ্রমিক আবদুল মান্নান গতকাল রোববার রাতে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে মারা যান। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফনের প্রস্তুতি চলছিল। স্বজনদেরও জানানো হয় মৃত্যুর সংবাদ। ততক্ষণে তাঁর মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। হঠাৎ মারা যাওয়ায় এলাকার লোকজনের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়, মান্নান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারেন। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি নিশ্চিত না হয়ে লাশ দাফনে আপত্তি জানান।

স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকেও ঘটনাটি জানানো হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন আজ সোমবার আবদুল মান্নানের বাড়িতে যান। স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন তাঁর পরিবার এবং আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হন, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মান্নান। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন না বলে এলাকার লোকজনদের আশ্বস্ত করা হয়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে বেলা একটার দিকে আবদুল মান্নানের লাশ দাফন করা হয়।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, হঠাৎ মারা যাওয়াতে লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে ওই শ্রমিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন না। বেশি জমায়েত যাতে না হয়, এ জন্য পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছিল। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।

স্বজনদের ভাষ্য, আবদুল মান্নান দীর্ঘদিন ধরেই হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত ছিলেন। সর্দি, জ্বর, কাশি বা করোনাভাইরাসের অন্য কোনো উপসর্গ ছিল না। এসব বলার পরও এলাকার কিছু বাসিন্দা বিষয়টি মানছিলেন না। তাদের পক্ষ থেকে বাধা না পেলে রাতেই বা আজ সকালে লাশ দাফন করা হতো।

বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, মৃত শ্রমিকের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এবং উপসর্গ দেখে মনে হয়েছে তিনি হৃদ্‌রোগে মারা গেছেন। করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ ছিল না এবং তিনি কোনো বিদেশফেরত ব্যক্তির সংস্পর্শে যাননি। বিষয়টি এলাকার লোকজনদের জানানোর পরই দাফনে তারা সম্মতি দিয়েছে।