প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের আয়োজন পণ্ড করে দিলেন এলাকাবাসী

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধায় বন্ধ হয়ে যায় প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের আয়োজিত অনুষ্ঠান। কালীগঞ্জ, সাতক্ষীরা, ৩০ মার্চ। ছবি: কল্যাণ ব্যানার্জি
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধায় বন্ধ হয়ে যায় প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের আয়োজিত অনুষ্ঠান। কালীগঞ্জ, সাতক্ষীরা, ৩০ মার্চ। ছবি: কল্যাণ ব্যানার্জি

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে লোকজন সমবেত করে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেন। সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ওই অনুষ্ঠানে দেড় শতাধিক মানুষ সমবেত হয়েছিল বলে জানান স্থানীয় লোকজন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মনোজিৎ কুমার মণ্ডল বলেন, তাঁদের কার্যালয়ের ডিএলএস র‌্যাপিড রেসপন্স টিমের উদ্যোগে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জীবাণুনাশক স্প্রে বিতরণের জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে ১৫ জনের মধ্যে ডিম, মুরগির মাংস, স্যানিটাইজার ও জীবাণুনাশক স্প্রে বিতরণ করা হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু ১৫ জনের স্থলে আরও ২০-২৫ জন মানুষ চলে আসে। হঠাৎ স্থানীয় বিএনপি নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য খায়রুল ইসলামের নেতৃত্বে এক দল মানুষ এসে অনুষ্ঠান করতে আপত্তি জানান। তিনি বাধ্য হয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন। পরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মুরগির খামারিদের বাড়িতে গিয়ে ওই সব জিনিস পৌঁছে দেওয়া হয়।

উপজেলা সদরের বাজারগ্রাম রহিমপুর এলাকার বাসিন্দা আবদুল জব্বার গাজী ও আবদুল মালেক গাজী জানান, হঠাৎ দেখেন সকাল ১০টার দিকে প্রাণিসম্পদ অফিসে লোকজন জড়ো হচ্ছে। মোটরসাইকেলে ও সাইকেলে দেড় শতাধিক মানুষ সেখানে আসে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা প্রচার চালাচ্ছেন একজনের বেশি মানুষ একসঙ্গে না চলতে, সভা ও সমাবেশ না করতে। কিন্তু প্রাণিসম্পদ অফিসের মাধ্যমে এত মানুষ এক স্থানে জড়ো হলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকির আশঙ্কা থাকে। একপর্যায়ে তাঁরা স্থানীয় ইউপি সদস্য খায়রুল ইসলামকে খবর দেন। তিনি এসে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মনোজিৎ কুমার মণ্ডলের কাছে এ সম্পর্কে জানতে চান। এ সময় ৩০-৪০ জন গ্রামবাসী প্রাণিসম্পদ অফিসের বাইরে এসে বিক্ষোভ করে অনুষ্ঠান বন্ধ করার দাবি জানান। মানুষ আস্তে আস্তে চলে যেতে থাকে। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, এভাবে অনুষ্ঠান করা তাঁর ঠিক হয়নি। অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা দ্রুত নিজ নিজ বাড়িতে চলে যান। পরে মাংস, ডিম ও স্যানিটাইজার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এতে অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা ফিরে যান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, অনুষ্ঠানে ১৩০ জনের মধ্যে ডিম, মাংস ও স্যানিটাইজার বিতরণ করতে ওই আয়োজন করা হয়েছিল। এ জন্য সকালে সব প্যাকেট করা হয়।

ইউপি সদস্য খায়রুল ইসলাম বলেন, গ্রামবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কে বিএনপি করে বা না করে এটি বিষয় নয়। মানুষকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দেওয়া যাবে না।