করোনা শনাক্তে প্রশ্ন যাবে মোবাইল ফোনে

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি ও উপদ্রুত এলাকা চিহ্নিত করতে সব গ্রাহকের মোবাইল ফোনে পাঁচটি করে প্রশ্ন পাঠানো হচ্ছে। সেই প্রশ্নের উত্তরের ভিত্তিতে আক্রান্ত ব্যক্তি ও এলাকার ডিজিটাল ম্যাপ তৈরি করবে সরকার। এতে করে কোন এলাকায় কে রোগী, তা সহজেই চিহ্নিত করা যাবে। গত রোববার থেকে সীমিত আকারে এসএমএম পাঠানো শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুরো বাংলাদেশের ডিজিটাল ম্যাপ আমাদের হাতে আছে। এই কাজ সেই ম্যাপ ধরেই করা হচ্ছে। ম্যাপের সঙ্গে সব তথ্য যুক্ত করার পরপর কেউ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার থেকে বাইরে গেলেও আমরা জানতে পারব। তিনি বলেন, এই কাজের সঙ্গে এটুআই, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি), স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মোবাইল অপারেটরদের সংযুক্ত করা হয়েছে।’

এনটিএমসির একজন কর্মকর্তা জানান, যে পাঁচটি প্রশ্ন সব গ্রাহকের কাছে পাঠানো হবে, সেগুলো হলো বয়স কত, জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট আছে কি না, সম্প্রতি বিদেশ থেকে ফেরা কারও সংস্পর্শে এসেছেন কি না, করোনায় আক্রান্ত কারও সংস্পর্শে এসেছেন কি না এবং দীর্ঘমেয়াদি কোনো অসুখে ভুগছেন কি না।

গ্রাহকেরা এসব প্রশ্নের উত্তর এসএমএস আকারে পাঠাতে পারবেন, চাইলে ফোনও করতে পারবেন। নিজের মোবাইল ফোন থেকেও *৩৩৩২# ডায়াল করে কোনো চার্জ ছাড়াই তথ্য জানাতে পারবেন। সবই হবে টোলফ্রি। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা http://corona.gov.bd এই ঠিকানাতে ঢুকে তথ্য দিতে পারবেন। এর বাইরেও বিকাশ, জিপি, রবি, বাংলালিংক ও উবারের অ্যাপের মাধ্যমে সহজেই তথ্য জানাতে পারবেন। তথ্য জানানোর জন্য কাউকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে না। সঙ্গে সঙ্গে জানাতে পারবেন। দিনে লাখ লাখ দেওয়া যাবে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রতি ছয় ঘণ্টা পরপর মোবাইল অপারেটররা এই তথ্য এনটিএমসির কাছে হস্তান্তর করবে। তারা সেই তথ্যের ভিত্তিতে ডিজিটাল ম্যাপ তৈরি করবে। এই ম্যাপ হবে ৯৫ থেকে ৯৮ শতাংশই বিশ্বাসযোগ্য। কারণ, ফোন গ্রাহকের সেটের শনাক্তকরণ নম্বর ও অবস্থান ধরে ম্যাপ করা হবে। এতে একই তথ্য দুবার আসবে না। মোবাইল ফোন কোম্পানি রবি এ কাজ প্রথম শুরু করেছে। পরে সব মোবাইল কোম্পানিকে এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

সরকারি সূত্র জানায়, মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর হিসাবে সরকারি ছুটি বা বন্ধ ঘোষণার পর ঢাকা থেকে ১ কোটি ১০ লাখ গ্রামে চলে গেছে। এদের সঙ্গে বৃদ্ধ ও শিশুও রয়েছে। এসব লোকদের মধ্যে কেউ করোনাভাইরাস বহন করলে তা সহজেই সর্বত্র ছড়িয়ে যেতে পারে। এই ম্যাপের মাধ্যমে সে তথ্যও জানা যাবে। ম্যাপ তৈরির পর চিহ্নিত এলাকা ধরে ব্যবস্থা নেবে সরকার।

মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া করোনা এলাকা চিহ্নিত করতে ডিজিটাল ম্যাপ ব্যবহার করে সুফল পেয়েছে। তারা ঘরে বসেই জানতে পেরেছে কোথায় কত রোগী হচ্ছে, কমছে না বাড়ছে। বাংলাদেশেরও ডিজিটাল ম্যাপ তৈরি ও তথ্য বিন্যাসের সক্ষমতা আছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সরকার এখন সেই পথেই হাঁটছে।