প্রাণে বাঁচল লক্ষ্মীপ্যাঁচাটি

চিল আর একদল কিশোরের তাড়ায় মৃত্যুর মুখোমুখি হয় এই লক্ষ্মীপ্যাঁচা। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তি পাখিটি বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। দক্ষিণ জাঙ্গিরাই এলাকা, জুড়ী, মৌলভীবাজার, ৩০ মার্চ। ছবি: কল্যাণ প্রসূন
চিল আর একদল কিশোরের তাড়ায় মৃত্যুর মুখোমুখি হয় এই লক্ষ্মীপ্যাঁচা। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তি পাখিটি বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। দক্ষিণ জাঙ্গিরাই এলাকা, জুড়ী, মৌলভীবাজার, ৩০ মার্চ। ছবি: কল্যাণ প্রসূন

দিনে একটি গাছের ডালে বসা ছিল লক্ষ্মীপ্যাঁচাটি। একদল চিল প্যাঁচাকে তাড়া করে। একপর্যায়ে প্যাঁচাটি প্রাণ রক্ষায় উড়াল দিতে গিয়ে পাশের সড়কে পড়ে যায়। তখন একদল কিশোর পাখিটিকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারার চেষ্টা চালায়। বাদ সাধেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। তিনি প্যাঁচাটিকে বাড়িতে নিয়ে খাঁচায় ভরে রাখেন। রাতে স্থানীয় লোকজন ও গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে পাখিটিকে মুক্ত আকাশে ছেড়ে দেন। সোমবার মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা সদরের দক্ষিণ জাঙ্গিরাই এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টার দিকে চিলের তাড়ায় আশপাশের কোনো গাছে থাকা লক্ষ্মীপ্যাঁচাটি রাস্তার পাশে পড়ে যায়। স্থানীয় পাঁচ-ছয়জন কিশোর ছুটে গিয়ে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে পাখিটিকে মেরে ফেলতে চায়। এ সময় ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন একই এলাকার বাসিন্দা ও ঠিকাদার জাহাঙ্গীর আলম। তিনি কিশোরদের বাধা দেন। প্যাঁচাটিকে ধরে বাড়িতে নিয়ে যান। পরে রাত আটটার দিকে পাখিটিকে ছেড়ে দেন।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘নজরে না পড়লে ছোট ছেলেরা লক্ষ্মীপ্যাঁচাটাকে মেরেই ফেলত। আসলে তারা এটিকে চিনতে পারে নাই। অবশ্য বারণ করার পর তারা ফিরে যায়। বাসায় নেওয়ার পর খাঁচায় আটকে পাখিটিকে ভালোভাবে পরীক্ষা করে দেখলাম, শরীরে কোনো আঘাত নেই। কিছুই খেতে চাইল না। মনে হলো দুবার তাড়া খাওয়ায় খুব ভয় পেয়েছে। পাখিটা দিনে দেখতে পায় না বলে ছাড়িনি। তাই রাতে ছেড়ে দিলাম।’

বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞ শরীফ খান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বললেন, লক্ষ্মীপ্যাঁচা নিশাচর প্রাণী। দিনে অল্প দেখে। এরা বড় গাছের খোঁড়লে বাসা তৈরি করে থাকে। ইঁদুর, তেলাপোকা, অন্যান্য পাখির ডিম খায়। এরা কৃষকের পরম বন্ধু। বড় গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় এরা আবাসস্থল–সংকটে পড়েছে।