পঞ্চগড়ে জ্বরে আক্রান্ত নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করল পুলিশ

পঞ্চগড়
পঞ্চগড়

পঞ্চগড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলস্টেশনের যাত্রীছাউনিতে বসে গতকাল সোমবার রাত নয়টার দিকে কাঁপছিলেন এক নারী। কালো বোরকা পরা ওই নারীর কাশি হচ্ছিল ঘনঘন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে স্থানীয় লোকজন পুলিশ সুপারকে ফোন করে বিষয়টি জানান। পুলিশ রেলস্টেশনে এসে ওই নারীকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

পুলিশ ও সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে নিয়ে আসার পর সতর্কতার সঙ্গে ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। পরে তার মধ্যে করোনাভাইরাসের উপসর্গ পাওয়া না যাওয়ায় তাঁকে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি সাধারণ জ্বর-সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত।

সদর থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে থাকা অবস্থায় ৪২ বছর বয়সী ওই নারী পুলিশের কাছে নামসহ পরিচয় দিয়েছেন। ওই নারী পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি দিনাজপুর সদর উপজেলার বালুবাড়ি এলাকায়। ২৪ মার্চ পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে তিনি দিনাজপুর থেকে ট্রেনে পঞ্চগড়ে এসেছেন। এই কয়েক দিন তিনি রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন জায়গায় ছিলেন। একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি রেলস্টেশনের যাত্রীছাউনিতে অবস্থান নেন।

স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, এখন মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ঠিক এই সময়ে ওই নারী জ্বর-সর্দি ও কাশি নিয়ে রেলস্টেশনে বসে থাকায় লোকজনের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। এ জন্য পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছিল।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক মো. আতহার সিদ্দিকী বলেন, রাত ১০টায় ওই নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। ওই নারীর শরীরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোনো উপসর্গ পাওয়া যায়নি। তবে টানা কয়েক দিন খোলা আকাশের নিচে বা বাড়ির বাইরে থাকায় তাঁর ঠান্ডাজনিত সর্দি-কাশি হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তির সময় তাঁর শরীরে তেমন জ্বরও পাওয়া যায়নি। তাঁর সঙ্গে কথা বলে তাঁকে মানসিকভাবে স্বাভাবিক বলে মনে হয়েছে। ওই নারীকে মহিলা ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, ‘মানুষের মধ্যে এখন কিছুটা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ভীতি কাজ করছে। তবে এ বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতাও বেড়েছে। অসুস্থ ওই নারীকে রেলস্টেশনে দেখে আমাদের জানায় স্থানীয়রা। বিষয়টি জানার পর আমরা সেখানে একদল পুলিশ পাঠাই। আমাদের পুলিশ সদস্যরা সুরক্ষা পোশাক পরে তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করে। সমাজের প্রত্যেক মানুষের চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার আছে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করেছে।’