জ্বর-কাশি-শ্বাসকষ্ট নিয়ে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার নারীর মৃত্যু

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি গ্রামের কয়েকজনের সঙ্গে রাজশাহীর তানোর উপজেলায় ১১ দিন কৃষিকাজ শেষে বাড়ি ফেরার পর মারা যান। তাঁর সঙ্গে কৃষিকাজে যাওয়া সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

মারা যাওয়া ওই নারীর নাম মাংগো বারোয়ার (৫৫)। তিনি গোমস্তাপুর উপজেলার রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বসনইল প্যারাপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ওঁরাও সম্প্রদায়ের সদস্য।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বাইরে থেকে জ্বর-কাশি নিয়ে এসে মাংগো মারা গেছেন। এ কারণে তিনি প্রশাসন ও পুলিশের কাছে খবর দেন। এরপর গোমস্তাপুর থানা-পুলিশ ও গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তাঁরা মৃত নারীর আত্মীয়স্বজন ও গ্রামের লোকজনের কাছ থেকে জানতে পারেন, ওই নারীর যক্ষ্মা রোগ ছিল। তাই তাঁকে সমাধিস্থ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর গ্রামবাসী বিকেলে ওই নারীকে সমাধিস্থ করে।

কিন্তু মাংগো বারোয়ার যাঁদের সঙ্গে রাজশাহীর তানোরে কৃষিকাজে গিয়েছিলেন, তাঁদের সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়ে এসেছেন পুলিশ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের লোকজন। এ কারণে ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় মানুষের মনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। অনেকে ভয়ও পাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, মাংগোর সঙ্গে যাঁরা কাজে গিয়েছিলেন তাঁরা কোয়ারেন্টিন মানছেন কি না, তা তদারক করা দরকার। তাঁদের উপসর্গ দেখা দিলে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করা দরকার।

গোমস্তাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আইনুল হক বলেন, তাঁরা মাংগোর পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেছেন। জানতে পেরেছেন, ১১ দিন আগে রাজশাহীর তানোরের কালীগঞ্জ এলাকায় খেতের আলু তোলার কাজে গিয়েছিলেন মাংগো ও তাঁর মেয়েসহ ১১ জন নারী-পুরুষ। দুই দিন আগে মাংগো জ্বরে আক্রান্ত হন। গতকাল সোমবার সকালে তাঁরা এলাকায় ফিরে আসেন। পরিবার থেকে জানানো হয়েছে, মাংগোর যক্ষ্মা ছিল। শ্বাসকষ্টেও ভুগছিলেন বহুদিন থেকে। কিন্তু এখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সময়। এ জন্য তাঁর সঙ্গে কাজে যাওয়া অন্যদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সারোয়ার জাহান প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্থানীয় একটি কমিউনিটি ক্লিনিকে মাংগো গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ও ৯ মার্চ শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা নেন। করোনাভাইরাসে তাঁর মৃত্যু হয়নি বলেই আমরা মনে করি। তবু এখন সময়টা খারাপ। তাই মাংগোর সঙ্গে কাজে ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে।’