শ্রমজীবীদের ঘরে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন গুরুদাসপুরের চেয়ারম্যান

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মানুষের চলাচল সীমিত করায় বিপদে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ঘরবন্দী কর্মহীন মানুষের কাছে চাল-ডাল পৌঁছে দিতে উদ্যোগ নিয়েছেন গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন। অতিদরিদ্র, শ্রমজীবী ও যাদের ঘরে খাবার নেই, এসব মানুষকে নির্বাচিত করে দেওয়া হচ্ছে এই সহযোগিতা। গত রোববার রাত থেকে তিনি এ কার্যক্রম শুরু করেছেন।

যাদের আসলেই প্রয়োজন, তাদের কাছে চাল–ডাল পৌঁছে দিতে উপজেলাজুড়ে গ্রুপভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করেছেন আনোয়ার হোসেন। পৌরসভাসহ উপজেলার ৬৩ ওয়ার্ডে ৫৪টি গ্রুপ রয়েছে। প্রতিটি গ্রুপে সাতজন করে স্বেচ্ছাসেবী আছেন। তাঁরা ওয়ার্ডে ওর্য়াডে গিয়ে যাদের প্রকৃত প্রয়োজন, তাদের তালিকা তৈরি করছেন। ওই তালিকা ক্রসচেক করতে আছে আরেকটি গোপন কমিটি। এই কমিটি যাদের জন্য অনুমোদন দেয়, তাদের কাছেই পৌঁছে দেওয়া হয় সহায়তা।

আনোয়ার হোসেন বলেন, এই কার্যক্রমকে গতিশীল করতে এবং সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য আছে ‘করোনাভাইরাসসংক্রান্ত অসহায় হয়ে পড়া মানুষদের স্বেচ্ছায় সেবাদান’ নামে একটি মেসেঞ্জার গ্রুপ। এর সদস্য প্রায় ৫০০ জন।

আনোয়ার জানালেন, স্বেচ্ছাসেবীদের কাছ থেকে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ জনের প্রাথমিক তালিকা হাতে পাচ্ছেন তিনি। ক্রসচেক কমিটির যাচাই–বাছাইয়ে ৪০০ জনের নামের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০০ জনকে সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আরও ২০০ জনের তালিকা ধরে সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে। নতুন করে আরও মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করতে তালিকা যাচাই–বাছাইয়ের কাজ চলছে।


আনোয়ার হোসেন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ব্যক্তিগতভাবে চালানো এ কার্যক্রমের বিষয়ে তিনি বলেন, উপজেলার বেশির ভাগ মানুষের দিন এনে দিন খাওয়া অবস্থা। এর মধ্যে করোনোভাইরাসের হানা। সবকিছু বন্ধ থাকায় শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। তাই তাঁদের ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়ার এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবকেরা তালিকা ধরে রাতের বেলা খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন। এই সহায়তায় থাকছে ১০ কেজি করে চাল, এক কেজি আলু, আধা কেজি ডাল ও একটি করে সাবান।

এই কার্যক্রমের বিষয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন বলেন, সরকারের পাশাপাশি অনেকেই ব্যক্তি উদ্যোগে হতদরিদ্র, খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষকে সহায়তা করছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের উদ্যোগটি অনুকরণীয়।