নওগাঁয় পৃথক বন্দুকযুদ্ধে নিহত ২: পুলিশ

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নওগাঁর পত্নীতলা ও আত্রাই উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনার সময় পুলিশের আট সদস্য আহত হয়েছেন বলে তাদের ভাষ্য।

নওগাঁর পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, নিহত দুজনের মধ্যে একজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকের ১২টি মামলা রয়েছে। অপরজন অস্ত্র ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের আটটি মামলার আসামি।

পুলিশের ভাষ্য, পত্নীতলায় বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাটি ঘটে গতকাল দিবাগত রাত দুইটার দিকে উপজেলার দিবরদীঘি এলাকায়। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির নাম জাহিদুল ইসলাম (৩৮)। তাঁর বাড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের বালুঘা গ্রামে। পুলিশের ভাষ্য, জাহিদুল একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর বিরুদ্ধে পত্নীতলা, মহাদেবপুর ও সাপাহার থানায় ১২টি মাদক মামলা রয়েছে।

পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) পরিমল কুমার চক্রবর্তী বলেন, গোপন সূত্রে মাদক বেচাকেনার খবর পেয়েছিল পুলিশ। এর ভিত্তিতে পত্নীতলা থানার পুলিশের সহযোগিতায় নওগাঁ পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি দল রাত দুইটার দিকে উপজেলার দিবরদিঘী এলাকায় অভিযান চালায়। পুলিশের দলটি দিবরদীঘি সামাজিক বনায়ন এলাকায় পৌঁছায়। কিন্তু মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে যায়। এ সময় জাহিদুল ও তাঁর সঙ্গীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। ঘটনার সময় মাদক ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে উদ্ধার করে পত্নীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওসির ভাষ্য, এই অভিযানে পত্নীতলা থানার পুলিশের চার সদস্য আহত হন। তাঁরা হলেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আব্দুর রাজ্জাক ও মোমিনুল ইসলাম, কনস্টেবল জুয়েল রানা ও মিঠুন। তাঁরা বর্তমানে পত্নীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

ওসি আরও বলেন, অভিযানের একপর্যায়ে নিহত জাহিদুলের সঙ্গীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। কিন্তু ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও ফেনসিডিল এবং একটি শটগান উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এদিকে আত্রাই থানার পুলিশের ভাষ্য, উপজেলার তেলাবাদরী এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মিনহাজুল ওরফে মিন্টু (৩৭) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তাঁর বাড়ি উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়নের ভরতেতুলিয়া গ্রামে। তাঁর বিরুদ্ধে আত্রাই ও রানীনগর থানায় অস্ত্র ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ৮টি মামলা রয়েছে।

আত্রাই থানার ওসি মোসলেম উদ্দিন বলেন, আট মামলার পলাতক আসামি মিনহাজুল গতকাল রাত তিনটার দিকে উপজেলার তেলাবাদরী এলাকায় আরও কয়েকজন সন্ত্রাসীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন। গোপন সূত্রে এমন খবর আসে পুলিশের কাছে। এর ভিত্তিতে স্থানীয় থানার পুলিশের সহযোগিতায় নওগাঁ ডিবির একটি দল ওই স্থানে অভিযানে যায়। এ সময় মিনহাজুল ও তাঁর সঙ্গীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে মিনহাজুল গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে উদ্ধার করে আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওসির ভাষ্য, এই অভিযানে আত্রাই থানার পুলিশের চার সদস্য আহত হন। তাঁরা হলেন উপপরিদর্শক (এসআই) মুস্তাফিজুর রহমান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাহবুব হোসেন এবং কনস্টেবল হালিম ও ফরিদ আহমেদ। তাঁরা বর্তমানে আত্রাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। অভিযানের পর ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, চারটি গুলি ও দুটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান ওসি।