থানায় একজনের মৃত্যু: সাময়িক বরখাস্ত ওসির বিরুদ্ধে মামলা

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বরগুনার আমতলী থানার সাময়িক বরখাস্তকৃত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি–তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ হেফাজতে হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি সানু হাওলাদারের মৃত্যুর ঘটনায় আমতলী থানায় মামলাটি হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেনের কাছে অভিযোগ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার রাতে মামলাটি করা হয়। মামলাটি তদন্তের জন্য বরগুনা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারুন অর রশিদ হাওলাদারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সানুর পরিবার ও মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার পশ্চিম কলাগাছিয়া গ্রামের কৃষক ইব্রাহিমকে গত বছরের ৩ নভেম্বরে খুন হন। ওই হত্যা মামলায় সানু হাওলাদারের সৎভাই মিজানুর রহমান হাওলাদার এজাহারভুক্ত আসামি। এ বছরের ২৩ মার্চ রাতে এ মামলায় সহেন্দভাজন আসামি হিসেবে সানুকে ধরে নিয়ে আসে পুলিশ।

সানুর পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে ধরে আনার পর ছেড়ে দিতে আমতলী থানা তৎকালীন ওসি আবুল বাশার (প্রত্যাহার) ও ওসি–তদন্ত মনোরঞ্জন মিস্ত্রি (সাময়িক বরখাস্ত) পরিবারের কাছে তিন লাখ টাকা দাবি করেন। ওই টাকা দিতে অস্বীকার করে সানুর পরিবার। এই দুই কর্মকর্তা তখন পুলিশ হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের নামে সানুকে নির্যাতন করেন। ২৫ মার্চ পরিবারের লোকজন সানুর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে পুলিশ দেখা করতে দেয়নি।

ওই সময় ওসি আবুল বাশার দাবি করেছিলেন, গত ২৬ মার্চ সকাল সোয়া ছয়টার দিকে আসামি সানু শৌচাগারে যেতে চান। পুলিশ তাঁকে শৌচাগারে নিয়ে যায়। এক ফাঁকে সানু ওসি–তদন্ত মনোরঞ্জন মিস্ত্রির কক্ষে ঢুকে ফ্যানে রশি লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।

তবে পুলিশের এমন ব্যাখ্যা মেনে নেয়নি পরিবার। এ ঘটনা তদন্তে বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন এবং বরিশাল বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটির কাজ চলছে। তবে এ ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার জন্য বরগুনার পুলিশ সুপার আমতলী থানার ওসি–তদন্ত মনোরঞ্জন মিস্ত্রি ও দায়িত্বরত কর্মকর্তা এএসআই আরিফুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। আর ওসি আবুল বাশারকে আমতলী থানা থেকে প্রত্যাহার করে বরগুনা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।

এদিকে গত মঙ্গলবার ঢাকার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান লিখিত অভিযোগ করেন। পরে গতকাল রাতে বরগুনার পুলিশ সুপার আমতলী থানাকে মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

আমতলী থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মনোরঞ্জন মিস্ত্রির বিরুদ্ধে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন–২০১৩–এর ১৫ ধারায় নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।