'জ্বর-শ্বাসকষ্ট শুনে মেয়েটার সঙ্গে যা করল তা অমানবিক'

বেশ কিছুদিন ধরে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন এক নারী। চিকিৎসার জন্য স্বামীকে নিয়ে গাজীপুর থেকে সাভার পৌর এলাকায় বাবার বাড়িতে এসেছিলেন। কিন্তু এসব উপসর্গের কথা জেনে এলাকার কয়েকজন তরুণ স্বামীসহ ওই নারীকে এলাকাছাড়া করেন।

ওই নারীর বাবা বলেন, ‘জ্বর–শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত শুনে আমার মেয়েটার সঙ্গে যা করা হলো, তা অমানবিক। এটা মেনে নেওয়া যায় না। পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে নীরবে সব সহ্য করলাম।’

এই বাবা আরও বলেন, স্বামীকে নিয়ে মেয়ে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে থাকেন। মাসখানেক ধরে তাঁর মেয়ে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। বাড়িতে ফকির দিয়ে চিকিৎসা করে সুস্থ না হয়ে গতকাল বুধবার দুপুরে সাভারে তাঁর কাছে চলে আসেন। সাভারে ভালো কোনো চিকিৎসককে দেখাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাড়িতে পা রাখার কয়েক মিনিটের মধ্যেই এলাকায় খবর ছড়িয়ে পড়ে। বাড়িতে উপস্থিত হন একদল তরুণ। তাঁরা মেয়ে ও জামাতাকে চলে যেতে বাধ্য করেন। তবে ওই তরুণ কারা, তাঁদের বিষয়ে তিনি কিছু বলেত চাননি।

এক প্রতিবেশী বলেন, মেয়েটির জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ছিল। তবে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জ্বর–শ্বাসকষ্টের উপসর্গের কথা জানার পরপর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তরুণেরা ভয়ে ওই দম্পতিকে এলাকাছাড়া করেন।

এ প্রসঙ্গে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সায়েমুল হুদা বলেন, জ্বর ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে মেয়েটির বাবার বাড়িতে আসা উচিত হয়নি। আর এসেই যখন পড়েছিলেন, তখন জামাতাসহ তাঁকে হোম কোয়ারেন্টিনে রেখে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগাযোগ করা উচিত ছিল। তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া ঠিক হয়নি। মেয়েটি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকলে অন্যদেরও সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।