এসআইয়ের গুলিতে বাবা ও ছেলে আহত

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ফরিদপুরে নগরকান্দা থানার এক উপপরিদর্শকের (এসআই) গুলিতে বাবা ও ছেলে আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের ঝাউডাঙ্গি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত বাবার নাম মোসলেম শেখ (৫৫) ও তাঁর ছেলে সবুজ শেখ (৩৪)। তাঁরা বর্তমানে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত এসআই হলেন মো. আতিয়ার রহমান।

সবুজ শেখ দাবি করেন, এসআই আতিয়ারের শটগানের গুলিতে তাঁরা আহত হয়েছেন। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তাঁরা। ওই ঘটনার পর উল্টো আতিয়ার বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ এনে আহত বাবা ও ছেলেকে আসামি করে মামলা করেছেন।

পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশাকে। তাঁকে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এলাকাবাসী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছয় মাস আগে নগরকান্দা থানায় এসআই আতিয়ার রহমান উপজেলার ঝাউডাঙ্গি গ্রামে এক নারীকে (২৭) বিয়ে করেন। ওই নারী সৌদি আরবপ্রবাসী এক ব্যক্তির স্ত্রী ছিলেন। ওই ব্যক্তি প্রবাসে থাকায় ওই নারী ও এসআই আতিয়ারের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে প্রবাসী স্বামীকে তালাক দিয়ে এসআই আতিয়ারকে বিয়ে করেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঝাউকান্দি গ্রামে দুটি পক্ষ আছে। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন আতিয়ারের নতুন স্ত্রী ও তাঁর ভাই ফরিদ শেখ এবং অপর পক্ষকে নেতৃত্ব দেন আবদুল মতিন শেখ। কোনো জটিলতা সৃষ্টি হলে আতিয়ার একটি পক্ষের হয়ে কাজ করেন। চার দিন আগে ওই গ্রামে দুই কিশোরীকে নিয়ে একটি ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে দুই পুলিশ সদস্য বুধবার ওই গ্রামে যান।

গ্রামবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় এসআই মো. আতিয়ার রহমান ও নগরকান্দা থানার কনস্টেবল রাব্বীকে নিয়ে ঝাউডাঙ্গা গ্রামে আসেন। গ্রামের বাসিন্দা মোসলেম শেখকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে মোসলেমের ছেলে সবুজ শেখ বাধা দেন। তখন সবুজের সঙ্গে আতিয়ারের ধস্তাধস্তি হলে আতিয়ার কনস্টেবল রাব্বীর কাছ থেকে শটগান নিয়ে গুলি করেন। এতে সবুজের হাতে ও উরুতে এবং মোসলেমের হাতে রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়। এরপর এলাকাবাসী পুলিশ সদস্য আতিয়ার ও রাব্বীর ওপর চড়াও হলে তাঁরা মোটরসাইকেল ফেলে চলে যান। এরপর এলাকাবাসী আহত মোসলেম ও তাঁর ছেলে সবুজকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

নগরকান্দা ও সালথা সার্কেলের দায়িত্বরত জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার এফ এম মহিউদ্দিন জানান, পুলিশ একটি মামলার তদন্তে ঝাউডাঙ্গি গ্রামে গেলে এলাকাবাসীর সঙ্গে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ‘ফায়ার’ হয়ে যায়। ফলে দুজন রাবার বুলেট বিদ্ধ হন। তিনি আরও জানান, এ ঘটনার পর এসআই আতিয়ার ও কনস্টেবল রাব্বী আহত হয়ে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। জনতা পুলিশের মোটরসাইকেল ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়েছেন। আতিয়ার বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় আহত মোসলেম ও সবুজকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাঁরা বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে চিকিৎসাধীন।