প্রতিপক্ষের হামলায় যুবলীগ নেতা নিহত

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় গতকাল শনিবার পুকুরের মালিকানা নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় বদিউজ্জামান সুজন (৩৩) নামের এক যুবলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন মাসুদ রানা (৩০) নামের এক স্কুলশিক্ষক। পরে অভিযুক্ত হামলাকারীদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

সুজন উপজেলার বৈগ্রামের মৃত সেলিম উদ্দিন সরদারের ছেলে। তিনি স্থানীয় বোয়লাদাড় ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি এবং বৈগ্রাম যুব উন্নয়ন ক্লাব ও গ্রন্থাগারের সভাপতি পদে ছিলেন। মাসুদ রানা এ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বিশাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৈগ্রাম বাজারের পাশে দুই বিঘার একটি খাসজমিতে পুকুর রয়েছে। বৈগ্রাম যুব উন্নয়ন ক্লাব ও গ্রন্থাগার পুকুরটি ইজারা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাছ চাষ করে আসছে। কিন্তু ছয় বছর আগে একই গ্রামের শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও এনামুল হক (৩৮) পুকুরটি তাদের দাবি করেন। এ ঘটনায় আদালতে একটি মামলাও চলমান রয়েছে।

পুকুরটি পরিষ্কার করতে গতকাল সকালে ক্লাবের পক্ষ থেকে শ্রমিক নিয়োগ করা হয়। শ্রমিকদের কাজ দেখতে সকাল সাতটার দিকে ঘটনাস্থলে যান সুজন ও মাসুদ রানা। কিছুক্ষণ পরই লাঠিসোঁটা হাতে নিয়ে পুকুরপাড়ে আসেন শফিকুল এবং তাঁর দুই ছেলে রবিউল ইসলাম (২৪) ও রানাসহ (২২) পাঁচজন। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে সুজন ও মাসুদের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। মাসুদের আঘাত গুরুতর না হওয়ায় স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো. মোস্তফা আবু হেনা বলেন, লাঠির আঘাতে সুজনের মাথার ডান পাশে ক্ষত সৃষ্টি হয়। সেখানে নয়টি সেলাই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে সুজনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে সুজনের মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছালে তাঁর পক্ষের লোকজন উত্তেজিত হয়ে প্রতিপক্ষ শফিকুলের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।

হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সবুর বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।