ফেসবুকে দেখে ভিক্ষুকের বাড়িতে খাবার নিয়ে হাজির ডিসি

ভিক্ষুক সাবিয়ার হাতে গতকাল শুক্রবার রাতে খাদ্যসামগ্রী ‍তুলে দেন নওগাঁর জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদ। ছবি: সংগৃহীত
ভিক্ষুক সাবিয়ার হাতে গতকাল শুক্রবার রাতে খাদ্যসামগ্রী ‍তুলে দেন নওগাঁর জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদ। ছবি: সংগৃহীত

সাবিয়া বেগমের বয়স প্রায় ৭০ বছর। সম্বল বলতে নওগাঁ শহরের বাঙ্গাবাড়িয়া এলাকায় সরকারি জমিতে টিনের তৈরি একটি ঘর। মানুষের বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করে জীবন চলে তাঁর। কিন্তু করোনাভাইরাস আতঙ্কে এখন কেউ বাড়িতে ঢুকতে দেন না। ফলে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছিল তাঁর। অন্যের ফেলে দেওয়া ভাত ধুয়ে খাওয়ার চেষ্টা করছিলেন, তাঁর এমন একটি ছবি ফেসবুকে দেখে খাবার পৌঁছে দেন নওগাঁর জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদ।

জানা গেছে, বাড়ির পাশে ফেলে দেওয়া ভাত ধুয়ে খাওয়ার আয়োজন করছিলেন সাবিয়া বেগম। এই ছবি তুলে নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেন রিয়াজ খান নামে স্থানীয় এক তরুণ। তিনি লেখেন, ‘ত্রাণ না পেয়ে কষ্টে দিন কাটছে ভিক্ষুক সাবিয়ার।’ পোস্টটি দেওয়ার পর মানুষ ওই বৃদ্ধাকে জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার অনুরোধ করেন।

বিষয়টি নজরে এলে গতকাল রাতে শহরের বাঙ্গাবাড়িয়া এলাকায় ওই বৃদ্ধার বাড়িতে চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসমাগ্রী নিয়ে হাজির হন নওগাঁর জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদ। শুধু ওই বৃদ্ধা নন, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া আরও ২৪টি পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন তিনি।

ত্রাণ পেয়ে ভীষণ খুশি বৃদ্ধা সাবিয়া। তিনি বলেন, তাঁর বাড়িতে এখন এক মাসের চাল–ডাল আছে। আপাতত তাঁর খাওয়া নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হবে না।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘এ পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৪০ হাজার পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। আরও অনেক মানুষ হয়তো আছেন, যাঁরা আমাদের তালিকার বাইরে রয়ে যাচ্ছেন। আমার জানামাত্রই ওই সব মানুষের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এমন অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা অনাহারে আছেন। কিন্তু লোকলজ্জার ভয়ে কারও কাছে চাইতে পারছেন না। তাঁরা আমাদের ফোনে জানালে তাঁদের বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে। কেউ যাতে সামাজিকভাবে হেয় না হন, সে জন্য জনসমাগম না করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।’