ইতালিফেরতদের প্রতি মনোভাব পরিবর্তনের আহ্বান রামরুর

রামরুর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাসনীম সিদ্দিকী। ছবি: সংগৃহীত
রামরুর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাসনীম সিদ্দিকী। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে অভিবাসীদের প্রতি বিশেষ করে ইতালি ফেরতদের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পরিহারের জন্য সকালের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (রামরু)। বেসরকারি এই সংগঠনটি অভিবাসীদের জন্য ঋণ সুবিধা দিতে তহবিল গঠনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে অভিবাসীদের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো তুলে ধরে রামরু কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে ‘করোনা সংকটে বাংলাদেশি অভিবাসী সুরক্ষা’ শীর্ষক অনলাইন প্রেস কনফারেন্সে এসব প্রস্তাব উপস্থাপন করেন রামরুর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাসনীম সিদ্দিকী।

সংবাদ সম্মেলনে তাসনীম সিদ্দিকী বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে অভিবাসীদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো তুলে ধরতে রামরু একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাসকে মহামারি ঘোষণা করে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে এর বিস্তার ঘটেছে।

লিখিত বক্তব্যে রামরু বলছে, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ৬ থেকে ৭ লাখ নারী-পুরুষ কাজের জন্য মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে অভিবাসনের জন্য যায়। এর বাইরে ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারী এবং পুরুষ স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। করোনা পরিস্থিতিতে এই দুই ধরনের অধিবাসীরা গভীর সংকটে পড়েছেন এবং উদ্বেগের সঙ্গে দিন কাটাচ্ছেন। ১ এপ্রিল পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিদেশের মাটিতে মারা গেছেন ৬০ জন অভিবাসী। করোনাভাইরাসের বিস্তারের সময়টিতে কিছু অভিবাসী দেশে ফিরে আসেন। তাঁরা কোনো নিয়ম মানছেন না এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে নানা ধরনের নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন। অভিবাসী পরিবারগুলোকে একঘরে করা হচ্ছে। তারা চিকিৎসাসেবা নিতে গেলেও হয়রানির মুখে পড়ছেন।

রামরু বলেছে, উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, করোনা সংক্রমণের উৎস হিসেবে মূলত অভিবাসীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছরের প্রথম তিন মাসে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে ১২ শতাংশ এবং সামনে আরও কমতে পারে। রেমিট্যান্স প্রবাহের নিম্নগতি জাতীয় অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে করোনাভাইরাসের প্রভাব অভিবাসীদের জন্য কিছু সুযোগ তৈরি করতে পারে। তাই সরকারের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কিছু পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

রামরুর প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে, করোনায় মৃত ব্যক্তিদের জন্য শোকপ্রস্তাব আনা এবং অভিবাসীদের ঋণ সুবিধা প্রদানের জন্য তহবিল গঠন করা। যেসব দেশ এখনো বিনা খরচে করোনার চিকিৎসাসহ স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেনি সেই দেশগুলোকে সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও অভিবাসীদের নিরাপত্তায় জোর দেওয়া, অভিবাসীদের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি, ফেরত আসাদের ম্যাপিং এবং রিটার্নিং ডেটাবেস তৈরি, অভিবাসী কর্মীরা যেন বিদেশে থেকে পরিবারের কাছে অর্থ পাঠানো চালু রাখতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ।

রামরু জানিয়েছে, তারা আগামী ১২ এপ্রিল রোববার দেশে-বিদেশে করোনায় মৃতদের স্মরণে সকাল ৯টায় এক মিনিট নীরবতা পালন করবে।