জ্বর ও মাথাব্যথায় আক্রান্ত গৃহবধূর মৃত্যু

জ্বর ও মাথাব্যথায় আক্রান্ত এক গৃহবধূ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার এক ঘণ্টা পর মারা গেছেন। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি মারা যান। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কি না, তা পরীক্ষা করার জন্য চিকিৎসকেরা নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গেছেন। এই ঘটনায় ওই গৃহবধূর পরিবারসহ কয়েকটি পরিবারকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শরীয়তপুর সদর উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের ওই গৃহবধূকে (২৫) তাঁর স্বজনেরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। জ্বর ও প্রচণ্ড মাথাব্যথার কারণে ওই নারী তখন অচেতন ছিলেন। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেন। এর এক ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই নারীর মৃত্যু করোনাভাইরাসে হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মুনির আহমেদ খান লাশের নমুনা সংগ্রহের নির্দেশ দেন। এমন পরিস্থিতিতে স্বজনেরা এক চিকিৎসকের কাছ থেকে ওই গৃহবধূর মৃত্যুর সনদসহ লাশ নিয়ে পালিয়ে যান।

সদর হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা যায়, ওই গৃহবধূর লাশ নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়ার পর মুনির আহমেদ স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানান। তখন জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের ওই নারীর নমুনা সংগ্রহের জন্য সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পালং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে ওই নারীর বাড়িতে পাঠান। তাঁরা ওই বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধি মেনে ওই নারীর দাফন করবে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ওই নারীর নমুনা পরীক্ষার জন্য সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হবে।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মুনির আহমেদ খান বলেন, ‘জ্বর ও মাথাব্যথা নিয়ে ওই নারী হাসপাতালে এসেছিলেন। তিনি দুই দিন ধরে বাড়িতে অসুস্থ ছিলেন। তাঁর বয়স বিবেচনায় ও শরীয়তপুর প্রবাসী–অধ্যুষিত জেলা হওয়ায় আমরা কোনো ঝুঁকি নিতে চাইনি। তাই তাঁর লাশের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। ওই খবর শুনে তাঁর স্বজনেরা লাশ নিয়ে পালিয়ে যান। তাঁদের চলে যেতে হাসপাতালের কেউ সহায়তা করেছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।’

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, ‘করোনাভাইরাস এখন সারা বিশ্বে মহামারি আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশের মানুষও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই ওই–জাতীয় উপসর্গ নিয়ে কেউ অসুস্থ হলে বা মৃত্যুবরণ করলে তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হবে।’