ধুনটে হাটবাজার বন্ধ

বগুড়া
বগুড়া

বগুড়ার ধুনট উপজেলার শহরে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে হাটবাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে গতকাল শনিবার দুপুরের পর থেকে হাটবাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে বিপাকে পড়েছে দিনমজুরসহ সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ধুনট পৌরসভা শহরে শনিবার ও মঙ্গলবার সপ্তাহের দুই দিন হাটবার। এই হাটে স্থানীয় লোকজনসহ অনেক দূর থেকে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ গরু, ছাগল, ধান, পাট, কাঁচা মালামাল ও নিত্যপ্রয়োজনী দ্রব্যসামগ্রী কেনাবেচা করতে আসেন। ফলে অন্যান্য দিনের চেয়ে হাটবার দিনে পুরো শহরে লোকজনের ভিড় ঠেকাতে হিমশিম খেতে হয় প্রশাসনকে। এর ওপর আবার করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় গত এক সপ্তাহে বিপুলসংখ্যক মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছে।

গ্রামে অবস্থান নেওয়া ব্যক্তিদের কারণে উপজেলা শহরের হাটবাজারে লোকসমাগম আরও বেড়ে গেছে। তারা সরকারি নির্দেশনা মানছে না। তাদের ঠেকাতে চলছে মাইকিং। তবু শহরে আসা–যাওয়া ঠেকাতে পারছে না প্রশাসন। এরপরই গতকাল দুপুর ১২টার পর থেকে উপজেলা পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় ধুনট পৌরসভার মেয়র এ জি এম বাদশাহ হাট বন্ধ করে দেন। ফিরিয়ে দেওয়া হয় হাটে আসা ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে।

তবে হঠাৎ উপজেলা প্রশাসনের এ কঠোর পদক্ষেপে বেকাদায় পড়েছে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। তারা মাঠে কাজ করে প্রতি হাটবারে চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল কেনে।

তারাকান্দি গ্রাম থেকে হাটে আসা সাবাজ আলী বলেন, ‘তিন দিন ধরে কাজ করে মহাজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে হাটে এসেছি। এখন হাটে এসে কিছুই কিনতে পাইলাম না। বাড়িতে যাইয়া পরিবার নিয়ে খাব কী? পরিবারে সদস্য পাঁচজন। কে করবে সহযোগিতা?’ একই কথা বললেন চালাপাড়া গ্রামের আমজাদ, নলডাঙ্গা গ্রামের সোবহানসহ ১০ থেকে ১২ জন দিনমজুর ও নির্মাণশ্রমিক।

ধুনট বাজারের কাঁচামাল বিক্রেতা হজরত আলী বলেন, উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় পৌরসভা মেয়রের অনুরোধে কেনাবেচা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘সকলের ভালো হলে আমারও ভালো।’

ধুনট পৌরসভার মেয়র বলেন, এ ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। সরকারি নির্দেশনায় সাধারণ মানুষদের করোনাভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা করতেই কঠোর হতে হয়েছে।


ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা জানান, সরকারি ছুটি থাকায় কয়েক দিন ধরে ঢাকাসহ বিভিন্ন শহর থেকে লোকজন এলাকায় ফিরে আসায় সমাগম বেড়ে যায়। ফলে সরকারি নির্দেশনায় হাটবাজার বন্ধের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।