করোনায় একজনের মৃত্যুতে নড়িয়ার ৩৫ বাড়ি লকডাউন

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গতকাল শনিবার যে দুজন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে একজনের বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায়। ৯০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির মৃত্যুর খবরে স্থানীয় প্রশাসন ৩৫টি বাড়ি লকডাউন করে দিয়েছে। হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে ওইসব বাড়ির ২০২ জনকে। উপজেলার সব হাট–বাজার লকডাউন করা হয়েছে।

এদিকে নড়িয়ায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি থাকায় ব্যাপক সংক্রমণের আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন। গতকাল রাত থেকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সব গ্রামে গণবিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হচ্ছে। স্থানীয় জনসাধারণকে ঘরের বাইরে না যাওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন উদ্বিগ্ন হয়ে পরেছেন।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের প্রথম আলোকে বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির বাড়ি ও আশপাশের ৩৩টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। এ ছাড়া পাশের উপজেলায় ওই ব্যক্তির মেয়ে ও বোনের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। এসব বাড়ির সদস্যদের নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করতে হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নড়িয়া উপজেলার কেউ যেন ঘর থেকে বের না হন—মাইকিং করে তা জনানাতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যন ও পৌর মেয়রদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেহেতু মৃত ব্যক্তি নড়িয়ার অনেক মানুষের সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাই এর সংক্রমণ ব্যাপক হওয়ার আশঙ্কা আছে।
ঘড়িসার বাজারের মুদি দোকানি বাবুল বৈদ্য বলেন, 'আমাদের পাশের গ্রামের লোক মারা গেছেন। এলাকার মানুষ আতঙ্কে আছি।'

নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ওই ব্যক্তিকে তাঁর স্বজনেরা গত বুধবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। তাঁর অসুস্থতার লক্ষণ শুনে ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে রেফার করা হয়। স্বজনেরা তাঁকে সেখানে ভর্তি করেন। সেখান থেকে আবার তাঁকে মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিলে তাঁকে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল তিনি মারা যান।

এই কর্মকর্তা জানান, ওই ব্যক্তির এক ছেলে কয়েক মাস আগে ইতালি থেকে দেশে আসেন। তিনি মাসখানিক আগে ঢাকার মিরপুরে ছেলের বাসায় বেড়াতে যান। গত ২৬ মার্চ তিনি নড়িয়ায় ফিরেন। তিনি ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি যে মসজিদে নামাজ আদায় করতেন, সেখানে কারা তাঁর সংস্পর্শ এসেছেন, সেসব তথ্য সংগ্রহ করে তাদের ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে। এ ছাড়া তিনি হাট–বাজার ও আত্মীয়–স্বজনের বাড়িও যেতেন।

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, 'ওই ব্যক্তির ছেলেরা বিভিন্ন হাট–বাজারে ব্যবসা করেন। এ কারণে নড়িয়ার সব হাট–বাজারের ওপর আমরা নজর রাখছি। লকডাউন বাস্তবায়ন করার জন্য বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।'