ফোন পেয়ে খাবার পৌঁছে দিলেন ওসি

দোকান থেকে খাদ্যসামগ্রী কিনে দুই রিকশা চালককে দিচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। গতকাল শনিবার রাত আটটার দিকে জুড়ী উপজেলার ডাকঘর সড়ক এলাকা থেকে ছবিটি তোলা। ছবি: কল্যাণ প্রসূন
দোকান থেকে খাদ্যসামগ্রী কিনে দুই রিকশা চালককে দিচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। গতকাল শনিবার রাত আটটার দিকে জুড়ী উপজেলার ডাকঘর সড়ক এলাকা থেকে ছবিটি তোলা। ছবি: কল্যাণ প্রসূন

ভাড়ায় রিকশা চালান তাঁরা। করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রিকশার চাকা ঘুরছে না। এ দিকে ঘরের খাবারও ফুরিয়ে গেছে। নিরুপায় হয়ে তাঁদের একজন 'ভয়ে ভয়ে' মুঠোফোনে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) সমস্যার কথা বলেন। কিছু সময় পর ওসি তাঁদের জন্য খাবার নিয়ে যান। গতকাল শনিবার রাতে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা সদরের পূর্ব বেলাগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব বেলাগাঁওয়ের বাসিন্দা সফর আলী, জালাল উদ্দিন, কিছমত মিয়াসহ আরও কয়েক জন ভাড়ায় রিকশা চালান। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের রিকশা চালানো বন্ধ করে বাড়িতে থাকতে বলা হয়। এ সময় প্রশাসনের কর্মকর্তারা বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়ার কথাও বলেন। গতকাল রাত আটটার দিকে সফর আলী জুড়ী থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন সরদারকে ফোন দিয়ে বলেন, ঘরে চাল-ডাল নেই। এখনো কোনো ত্রাণ পাননি। পরে নাম-ঠিকানা জেনে ওসি তাঁর বাড়িতে খাবারসামগ্রীর প্যাকেট নিয়ে যান। এ সময় আশপাশের আরও ১০-১২ জন রিকশাচালক ছুটে আসেন। তাঁদেরও খাবারসামগ্রীর প্যাকেট দেওয়া হয়। একপর্যায়ে প্যাকেট ফুরিয়ে গেলে স্থানীয় একটি দোকান থেকে খাবারসামগ্রী কিনে দেন ওসি। এ সময় ওসির সঙ্গে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলামসহ তিন-চার জন পুলিশ সদস্য ছিলেন।

সফর আলী আবেগাপ্লুত হয়ে বললেন, 'রিকশা বন্ধ। পরিবারে পাঁচ জন মানুষ। খাইবার কিচ্ছু ছিল না। পুলিশরে সবাই তো ভয় করে। এর লাগি ভয়ে ভয়ে থানার সরকারি নম্বরে ফোন দিলাম। স্যার (ওসি) বললেন, বাড়ি থাকো, আসছি। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না স্যার খাবার নিয়ে আসবেন। আমরা খুশি।'

ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, 'খেটে খাওয়া মানুষেরাই এ সময়টাতে খুব কষ্টে আছেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে তাঁদের বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে। প্রতি দিনই কেউ না কেউ ফোন দিয়ে কষ্টের কথা বলেন। সাধ্যমতো তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।'