শের-ই-বাংলা মেডিকেলের করোনা ইউনিটে আরও আট রোগী ভর্তি

করোনাভাইরাস। প্রতীকী ছবি
করোনাভাইরাস। প্রতীকী ছবি

বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে নতুন করে আটজনকে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার মধ্যে এসব রোগীকে বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে এখানে স্থানান্তর (রেফার) করা হয় বলে হাসপতাল কর্তৃপক্ষ জানায়। জ্বর, সর্দি–কাশি ও পেটে অসুখের মতো উপসর্গ নিয়ে তাঁদের এই হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ভর্তি হওয়া এসব রোগীর মধ্যে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সের কয়েকজন রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বরগুনা থেকে একজন, পটুয়াখালী থেকে একজন, ভোলা থেকে একজন, বরিশাল সদরের দুজন, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা থেকে একজন এবং ঝালকাঠির দুজন রয়েছেন।

বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মো. বাকির হোসেন আজ রোবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন জেলা থেকে যেসব রোগীকে এখানে পাঠানো হয়েছে, তাঁদের মধ্যে তেমন গুরুতর কোনো লক্ষণ নেই। কেবল গুরুতর শ্বাসকষ্ট আছে এমন রোগীদের এখানে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। বাকিদের জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। শুধু শুধু এসব রোগী জেলা হাসপাতাল থেকে এখানে পাঠানো হচ্ছে। এতে মানুষের মধ্যে ভীতি ছড়ায়। একই সঙ্গে বিভাগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালে এ ধরনের রোগী পাঠানো হলে গুরুতর রোগীরা অনেক সময় চিকিৎসা বঞ্চিত হতে পারেন।

মো. বাকির হোসেন আরও বলেন, ‘এসব মাথায় রাখার জন্য আমি বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালককে অনুরোধ করেছি। তিনিও ছয় জেলার সিভিল সার্জনদের তা অবহিত করেছেন। কিন্তু এরপরও বিষয়টি ঘটছে। নতুন ভর্তি রোগীরা বর্তমানে করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন এবং নিয়মানুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ খবর এ অঞ্চলের মানুষের করোনাসংক্রান্ত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা অনেকটা দূর করবে। করোনা সংক্রমণ এড়াতে সরকারি বিধিনিষেধ মেনে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করাসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে মারা যাওয়া ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া একই ইউনিটে থাকা আরও পাঁচজনের নমুনা পরীক্ষা করে তাঁদের শরীরেও করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মেলেনি। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) এসব নমুনা পরীক্ষার পর গতকাল শনিবার দুপুরে তাঁরা করোনায় আক্রান্ত হননি বলে প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ২৮ মার্চ গভীর রাতে ও ২৯ মার্চ সকালে সাড়ে সাত ঘণ্টার ব্যবধানে করোনা ইউনিটে এক নারী ও এক পুরুষের মৃত্যু হয়। তাঁদের মধ্য ২৮ মার্চ রাত ১২টার দিকে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে আসা বরিশাল নগরের পুরানপাড়া এলাকার ওই নারীকে করোনা সন্দেহে জরুরি বিভাগ থেকে করোনা ইউনিটে পাঠানো হয়। ওই ইউনিটে নেওয়ার কিছুক্ষণ পরই তিনি মারা যান। পরে দ্রুত তাঁর পরিবারের সদস্যরা লাশ নিয়ে দাফন করেন। ২৯ মার্চ সকাল সাড়ে সাতটায় শ্বাসকষ্ট, কাশি ও জ্বর নিয়ে করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন পটুয়াখালী সদর উপজেলার আরেক ব্যক্তি মারা যান। পরে ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠান চিকিৎসকেরা।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, শনিবার যে ছয়জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, তাঁদের একজন মারা গেছেন। বাকি দুজন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন। শনিবার প্রতিবেদন পাওয়ার পর আরও তিনজনকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।