মাদারীপুরে পুলিশের নারী সদস্যকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জখম

অনিমা বাড়ৈ।
অনিমা বাড়ৈ।

মাদারীপুর জেলা পুলিশের এক নারী সদস্যকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম করা হয়েছে। রণবীর নামের এক যুবক এই পুলিশ সদস্যকে জখম করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার রাত ১১টার দিকে জেলা শহরের লেকেরপাড়ের পৌর শিশুপার্কের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ওই নারী পুলিশ সদস্যের নাম অনিমা বাড়ৈ (২৭)। তিনি সদর মডেল থানার প্রশিক্ষণকালীন উপপরিদর্শক (পিএসআই)। তাঁর বাড়ি গোপালগঞ্জের ভাঙ্গার হাট এলাকায়। গুরুতর অবস্থায় রাতেই তাঁকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মাদারীপুর সদর থানা সূত্র জানায়, তিন মাস আগে সদর মডেল থানায় পিএসআই হিসেবে যোগদান করেন অনিমা বাড়ৈ। থানায় দায়িত্ব পালনের আগে অনিমা রোববার সন্ধ্যায় বাসা থেকে বের হন। পরে রিকশায় করে কথিত প্রেমিক রণবীরের সঙ্গে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ান। তিনি রাত ৮টার দিকে থানায় আসেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে দায়িত্ব পালন শেষে অনিমা থানা থেকে বের হন।

পুলিশ লাইনসে যাওয়া পথে রাত ১১টার দিকে অনিমার পথরোধ করেন রণবীর। এ সময় রণবীরের সঙ্গে অনিমার কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায় রণবীর ধারালো অস্ত্র দিয়ে অনিমাকে জখম করেন। তাঁর চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে রণবীর পালিয়ে যান। পরে গুরুতর অবস্থায় অনিমাকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাঁকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান কর্তব্যরত চিকিৎসক।

জানতে চাইলে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) বদরুল আলম মোল্লা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি, রণবীরের সঙ্গে ওই নারী পিএসআইর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। তাঁদের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায় রণবীর প্রথমে অনিমার গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। এতে তাঁর শ্বাসনালী অনেকখানি কেটে যায়। তাঁর হাতেও ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়। শ্বাসনালিতে গুরুতর জখম থাকায় মেয়েটি এখন কথা বলতে পারছেন না। তাঁকে গুরুতর অবস্থায় জেলার সদর হাসপাতাল থেকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে রাতেই তাঁর গলায় অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘আমরা আহত ওই পিএসআইর সঙ্গে এখনো কথা বলতে পারিনি। শুধু তিনি রণবীরের নামটাই বলেছেন। আমরা রণবীরের নামের সূত্র ধরে ছবি ও ফোন নম্বর কালেকশন (সংগ্রহ) করেছি। রণবীর ঢাকায় থাকেন। তবে তাঁর বাড়ি বগুড়া জেলায়। তাঁকে ধরতে পুলিশ অভিযানে নেমেছে।’

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মিঞা বলেন বলের, ‘আহত ওই নারী পিএসআই পুলিশ লাইনসে থাকেন। তিনি থানা থেকে সাড়ে ১০টার দিকে বের হয়ে যান। এরপরেই পথে ঘটে এই দুর্ঘটনা। ঘটনার পর থেকে তাঁর সঙ্গে আমরা কোনো কথা বলতে পারিনি। তিনি কথা বলার অবস্থায় নেই। আমরা তাঁর পরিবারকে খবর দিয়েছি। বিষয়টা তদন্ত করে দেখছি।’