হাসপাতালে যেতে না পারায় ইজিবাইকেই সন্তান প্রসব

জামালপুর
জামালপুর

প্রসববেদনা শুরু হওয়ায় ইজিবাইকে (ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা) করে স্বামীর সঙ্গে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্দেশে রওনা দেন বর্ণা আক্তার (২২)। কিন্তু পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রধান সড়কে থাকা রেলওয়ের একটি লেভেল ক্রসিংয়ের গেট ব্যারিয়ার। কে বা কারা প্রধান সড়কের গেট ব্যারিয়ারটি বন্ধ করে দিয়েছে। এতেই বর্ণা আক্তারকে বহনকারী ইজিবাইকটি আটকে যায়। পরে তিনি ইজিবাইকের মধ্যেই সন্তান প্রসব করেন।

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার প্রধান সড়কের মণ্ডলপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তবে প্রসূতি ও নবজাতক দুজনই সুস্থ আছেন। বর্ণা আক্তার ইসলামপুর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের ধনতলা গ্রামের এনামুল হকের স্ত্রী।

এনামুল হক মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, এটাই তাঁর প্রথম সন্তান। সকালে স্ত্রীর প্রসববেদেনা শুরু হয়। কোনো উপায় না পেয়ে একটি ইজিবাইকে করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পুরো রাস্তা যাওয়ার পর ইসলামপুর শহরের প্রধান সড়কের লেভেল ক্রসিং এলাকায় গিয়ে পৌঁছান। কিন্তু লেভেল ক্রসিংয়ের গেটটি বন্ধ করা। সেখানে পুলিশ সদস্যরা দাঁড়িয়ে রয়েছেন। অনেকক্ষণ সেখানে অপেক্ষা করেন। কয়েকজন স্থানীয় লোকও গেটটি খোলার চেষ্টা করেন। এদিকে স্ত্রীর প্রসববেদনা বাড়তে থাকে। পরে ইজিবাইকের মধ্যেই স্থানীয় কয়েকজন নারীর সহযোগিতায় সন্তান প্রসব করেন বর্ণা।

লেভেল ক্রসিং এলাকার স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সব যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে, ঠিক আছে। তবে একজন অসুস্থ রোগীকে নেওয়া যাবে না, এটা কিন্তু ঠিক না। স্থানীয় প্রশাসনের লোকজনই এই লেভেল ক্রসিংয়ের গেট বন্ধ করে দিয়েছেন। যাতে যানবাহন চলাচল না করে। একজন রোগী যেতে না পেরে ইজিবাইকের মধ্যেই সন্তান প্রসব করেছেন। এতে একটি বড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারত।

জামালপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (ইসলামপুর সার্কেল) মো. সুমন মিয়া বলেন, ‘লেভেল ক্রসিংয়ের গেটটি একদম বন্ধ ছিল। ওই গেটটি কে বা কারা বন্ধ করে রাখছে, সেটা আমরা জানি না। বন্ধ থাকায় সেই দিক দিয়ে তারা যেতে পারেনি। তবে পুলিশ সদস্যরা অন্য রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছেন।’

ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গর্ভবতী নারীকে বহনকারী ইজিবাইকটি লেভেল ক্রসিং এলাকায় এসে পুলিশ দেখে ভয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে চলে যায়। রোগী বহনকারী গাড়িকে আটকানোর কথা নয়। লেভেল ক্রসিংয়ের গেট ব্যারিয়ারটি একদম বন্ধ থাকার কথা নয়। কেন বন্ধ ছিল, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। তিনি বলেন, ‘আমি ওই নারীর বাড়িতে গিয়েছিলাম। বাচ্চা ও ওই নারীর জন্য কাপড়, ফল ও সাবান দিয়ে এসেছি। মা ও বাচ্চা দুজনেই ভালো আছেন।’