নাসিরনগরে মালয়েশিয়া প্রবাসীর মৃত্যু

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও কাশি নিয়ে এক মালয়েশিয়াপ্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৩৭ বছর।

ওই প্রবাসীর মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী ও শ্যালিকা বাদে শ্বশুর-শাশুড়িসহ পরিবারের লোকজন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পালিয়ে গেছেন। লাশের দাফনকাজ সম্পন্নের জন্য উপজেলা প্রশাসনের গঠিত কমিটির লোকজনও যাচ্ছেন না। লাশ নিয়ে বিপাকে পড়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

এই প্রবাসী উপজেলার অন্য গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। তিনি গত ১৮ মার্চ মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসেন। ১ এপ্রিল তাঁর হোম কোয়ারেন্টিন শেষ হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, ৪ এপ্রিল শরীরে জ্বর নিয়ে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান মালয়েশিয়াপ্রবাসী। সে সময় আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম তাঁকে রক্তের পরীক্ষা করাতে বলেন। রক্তের পরীক্ষায় প্রবাসীর শরীরে টাইফয়েডের জীবাণু ধরা পড়ে। সে সময় তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই ব্যক্তি বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা চালাবেন বলে শ্বশুরবাড়িতে চলে যান। সোমবার রাতে তিনি অতিমাত্রায় জ্বর ও শ্বাসকষ্ট ভুগছেন বলে পরিবারের লোকজন চিকিৎসক সাইফুলকে জানান। তখন আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা দ্রুত তাঁকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার জন্য বললেও তাঁরা তা শোনেননি। মঙ্গলবার রাতে তাঁকে অটোরিকশায় করে স্ত্রী, বাবা ও শ্বশুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু পথেই তাঁর মৃত্যু হয়।

নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, লক্ষণগুলো দেখে ওই প্রবাসী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়ে থাকতে পারেন বলে সন্দেহ হচ্ছে। পরিবারের লোকজন অনেক কিছু লুকানোর চেষ্টা করছেন। তবে নমুনা নেওয়া হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অভিজিৎ রায় বলেন, সর্বশেষ প্রবাসীর শরীরের তাপমাত্রা ১০৩ ডিগ্রি পাওয়া গেছে। তাঁর পরিবারের সব সদস্যকে আইসোলেশনে রাখা হবে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুলিশ সদস্যরাও আসতে চাইছেন না।

তবে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমা আশরাফী জানান, ওই প্রবাসী ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিন শেষ করে শ্বশুরবাড়িতে চলে গিয়েছিলেন। বিশেষ ব্যবস্থায় তাঁর লাশ দাফন করা হবে।