দীঘিনালায় অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত আরও ১৫ শিশু হাসপাতালে ভর্তি

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া শিশুদের কয়েজন। দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি, ৮ এপ্রিল। ছবি: প্রথম আলো
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া শিশুদের কয়েজন। দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি, ৮ এপ্রিল। ছবি: প্রথম আলো

খাগড়াছড়ির দীঘিনালার রথিচন্দ্র কার্বারী পাড়ায় আরও ১৫ শিশু অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তাদের বুধবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে অজ্ঞাত রোগে গ্রামের ৪৭ শিশু আক্রান্ত হলো। এ ছাড়া আক্রান্ত এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ঢাকায় পাঠানোর জন্য পাঁচ শিশুর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে করোনাভাইরাস নিয়ে চলমান লকডাউনের কারণে নমুনা ঢাকায় পাঠানো যায়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

বুধবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, অন্তবিভাগের মহিলা ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে নতুন আক্রান্ত ১৫টি শিশুকে। সেখানে তাদের ভর্তি রেখে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। এই শিশুদের প্রত্যেকেই পুষ্টিহীনতায় ভুগছে।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদুল আলম বলেন, দুপুরে দুর্গম রথিচন্দ্র কার্বারী পাড়া থেকে মোট ১৮ জনকে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে ১৫টি শিশু। বাকি তিনজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি। সবাইকেই হাসপাতালের অন্তবিভাগে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

নতুন আক্রান্ত ১৫ শিশুর মধ্যে দুজন রথিচন্দ্র কার্বারী পাড়ার বাসিন্দা বিনর কান্তি ত্রিপুরার (৪০) সন্তান। তিনি বলেন, ‘গত পাঁচ দিন ধরে আমার দুই সন্তান খুমবাতি ত্রিপুরা ও ভবাতি ত্রিপুরা খুব অসুস্থ। তাই দুপুরে গ্রামের অন্যদের সঙ্গে আমার দুই সন্তানকেও হাসপাতালে এনেছিলাম। চিকিৎসক সবকিছু শোনার পর তাদের ভর্তি করে নেন।'

এর আগে ২৮ মার্চ দুর্গম রথিচন্দ্র কার্বারী পাড়ায় অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে ধনিকা ত্রিপুরা (৯) নামের এক শিশু মারা যায়। এরপর ২৯ ও ৩১ মার্চ সেখানকার ২৫ শিশুকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ছাড়া স্থানীয় নয়মাইল ত্রিপুরা পাড়া এলাকার আরও ছয় শিশুকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে গ্রামে গিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। পরে তাদের মাধ্যমে শিশুদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তনয় তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হওয়া ১৫ শিশুকে বুধবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে শারীরিক অবস্থা দেখে মনে হয়েছে তারা হামে আক্রান্ত। তবে নমুনা পরীক্ষা করার আগে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। আগের শিশুদের মধ্যে পাঁচজনের নমুনা ৩১ মার্চ সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে চলমান লকডাউনের কারণে তা ঢাকায় পাঠানো সম্ভব হয়নি।