রাজশাহীতে বৃদ্ধ দম্পতির ঘরে আগুন দিল দুর্বৃত্তরা

সহায়সম্বল বিছানাপত্র পুড়ে যাওয়ায় বিমর্ষ বৃদ্ধ পলানাথ সরকার। বড়বিহানালী গ্রাম, বাগমারা, রাজশাহী, ৯ এপ্রিল। ছবি: প্রথম আলো
সহায়সম্বল বিছানাপত্র পুড়ে যাওয়ায় বিমর্ষ বৃদ্ধ পলানাথ সরকার। বড়বিহানালী গ্রাম, বাগমারা, রাজশাহী, ৯ এপ্রিল। ছবি: প্রথম আলো

বৃদ্ধ এক দম্পতি। সহায়সম্বল বলতে ছিল কেবল বিছানাপত্র। তার ওপরে ঘুমিয়ে ছিলেন। গভীররাতে দুর্বৃত্তরা জানালা দিয়ে সেখানে আগুন নিক্ষেপ করে। এতে বিছানাপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কোনোমতে প্রাণ নিয়ে ঘর থেকে বের হতে পেরেছেন ওই দম্পতি। বুধবার দিবাগত রাতে রাজশাহীর বাগমারায় ঘটেছে এ ঘটনা।

ওই বৃদ্ধা দম্পতি হলেন পলানাথ সরকার ও গীতা সরকার। তাঁরা উপজেলার বড়বিহানালী গ্রামের হিন্দুপাড়ার বাসিন্দা। এই দম্পতি আশঙ্কা, তাঁদের পুড়িয়ে মারতেই আগুন দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। তবে সৌভাগ্যক্রমে তাঁরা প্রাণে বেঁচে গেছেন।

পলানাথ সরকার বলেন, বুধবার রাতে রাতের খাবার খেয়ে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। মধ্যরাতে শরীরে আগুনের আঁচ অনুভব করেন। এতে ঘুম ভেঙে যায়। দেখতে পান, বিছানাপত্র আগুনে জ্বলছে। চিৎকার দিয়ে স্ত্রীকে ডাকেন। দুজনে ঘরের বাইরে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু বাইরে থেকে ছিটকিনি আটকানো ছিল। তাই দরজা খুলতে ব্যর্থ হন। পরে দুজনে মিলে ধাক্কা দিয়ে দরজা ভেঙে ফেলেন। এরপর বাইরে আসতে সক্ষম হন তাঁরা। পরে পানি দিয়ে আগুন নেভান। ততক্ষণে বিছানাপত্র পুড়ে যায়। আগুনে তাঁর হাতও পুড়ে গেছে।

বৃদ্ধ পলানাথ সরকার বলেন, তাঁদের সম্বল বলতে ছিল বিছানাপত্র। সেগুলোই পুড়ে গেছে। দুর্বৃত্তরা কেরোসিন তেলে কাপড় ভিজিয়ে তাতে আগুন দেয়। জ্বলতে থাকা কাপড় জানালা দিয়ে ঘরের ভেতরে মধ্যে ছুড়ে দেয়। এতে বিছানাপত্রে আগুন ধরে যায়। তাঁদের হত্যার জন্যই আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ধারণা করে তিনি বলেন, কে বা কারা আগুন দিয়েছে তা বুঝতে তিনি পারছেন না। তবে এক সময় নাতনির জন্মদিন পালন করা নিয়ে একটা পক্ষের সঙ্গে তাঁর বিরোধ হয়েছিল। ওই সময়ে তাঁকে একঘরে করে রাখা হয়েছিল। এর বাইরে কারও সঙ্গে তাঁর বিরোধ নেই। তবে কোথাও অভিযোগ দেবেন না বলে জানান এই বৃদ্ধা।

বড়বিহানালী ইউপির চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান বলেন, পরিবারটিকে হত্যার উদ্দেশ্যেই হয়তো আগুন হয়েছে। এটা অমানবিক কাজ। ওই বৃদ্ধ দম্পতির বিছানাপত্র ছাড়া কোনো কিছুই ছিল না। সেটাও পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। পরিবারটি এখন কোথায় ঘুমাবে, তারও ঠিক থাকল না।

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, তিনি এমন কোনো ঘটনা জানেন না। কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। ঘটনাটি জেনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।