করোনার আক্রান্ত রোগী শনাক্ত, ৫ গ্রাম লকডাউন

কুমিল্লা
কুমিল্লা

কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বিরামকান্দি গ্রামে বৃহস্পতিবার বিকেলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছে। পরে বিরামকান্দির পাশাপাশি স্থানীয় মনাইরকান্দি, কাপাশকান্দি, গাজীপুর ও সাগরফেনা গ্রাম লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। আর ওই ব্যক্তিকে চিকিৎসা দেওয়া দাউদকান্দি উপজেলার এক পল্লিচিকিৎসকের ভবনের সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, তিতাস উপজেলার বিরামকান্দি গ্রামের এক বাসিন্দা সপ্তাহখানেক আগে ঢাকা থেকে গ্রামে ফেরেন। এরপর থেকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসার জন্য স্থানীয় কড়িকান্দি বাজারের এক পল্লিচিকিৎসকের কাছে যান। তিনি টাইফয়েড পরীক্ষার জন্য রক্ত নেন। কিন্তু টাইফয়েডের জীবাণু না পেয়ে তাঁকে স্বাভাবিক ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু ওই ওষুধে অবস্থার উন্নতির পরিবর্তে অবনতি হয়।

অসুস্থ ওই ব্যক্তি ৫ এপ্রিল তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা উপসর্গের কথা শুনে নমুনা সংগ্রহ করেন। পরীক্ষার জন্য তা ঢাকায় পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে পরীক্ষার প্রতিবেদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসে। তাতে দেখা যায়, ওই ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁকে নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সরফরাজ হোসেন খান বলেন, ঢাকায় থাকাকালে ওই ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন। গ্রামে ফেরার পর নমুনা পরীক্ষায় বিষয়টি ধরা পড়েছে। এ অবস্থায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সবার নমুনা নিয়ে পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এদিকে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে এলাকায় যান তিতাস উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও থানার কর্মকর্তারা। তাঁরা বিরামকান্দি, মনাইরকান্দি, কাপাশকান্দি, গাজীপুর ও সাগরফেনা গ্রাম লকডাউন ঘোষণা করেন। ওই ব্যক্তিকে চিকিৎসা দেওয়া পল্লিচিকিৎসকের বাড়ি দাউদকান্দির গৌরীপুর দক্ষিণ বাজার এলাকায়। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও থানার কর্মকর্তারা এলাকায় যান। এরপর ওই চিকিৎসকসহ একই ভবনে থাকা সব পরিবারকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়ে আসেন। পল্লিচিকিৎসকসহ তাঁর পরিবারের সবার নমুনা সংগ্রহ করে শুক্রবার সকালে পাঠানো হয়।

দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহীনূর আলম বলেন, পল্লিচিকিৎসকসহ তাঁর পরিবারের সবার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত ওই ভবনের সবাই কোয়ারেন্টিনে থাকবেন।