কাবুলে জঙ্গি হামলার দায়ে আফগানিস্তানে বাংলাদেশি আটক

মোহাম্মদ তানভীর। ছবি: সংগৃহীত
মোহাম্মদ তানভীর। ছবি: সংগৃহীত

কাবুলের শিখদের উপসনালয় গুরুদুয়ারা হার রাই সাহিবে আইএসের বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মোহাম্মদ তানভীর নামের এক বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে আফগানিস্তানের গোয়েন্দারা। ২৫ মার্চের ওই জঙ্গি হামলার মূল হোতা পাকিস্তানি নাগরিক আসলাম ফারুকীর সহযোগী তানভীর ছাড়াও আলী মোহাম্মদ নামের এক পাকিস্তানি নাগরিককেও আফগান গোয়েন্দারা গ্রেপ্তার করে।

আফগান গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল ডিরেক্টরেট অব সিকিউরিটি (এনডিএস) গত রোববার তাদের টুইটে আলী মোহাম্মদ ও মোহাম্মদ তানভীরকে কয়েক দিন আগে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছে। এনডিএসের বরাত দিয়ে গতকাল রোববার আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম আরটিএ এই খবর প্রচার করেছে।

আরটিএ তাদের টুইটে আসলাম ফারুকী ও মোহাম্মদ তানভীরের ছবি প্রচারের পাশাপাশি বাংলাদেশি তরুণের একটি ভিডিও প্রচার করেছে। ওই টুইটে বলা হয়েছে, তানভীর আইএসের অর্থায়ন বিশেষজ্ঞ এবং আলী মোহাম্মদ তহবিল এবং অন্যান্য রসদ সংগ্রহে বিশেষজ্ঞ।

আরটিএর টুইটে প্রচারিত ভিডিওতে মোহাম্মদ তানভীর নিজেকে ঢাকার অধিবাসী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। পাকিস্তান সীমান্তবর্তী আফগানিস্তানের নানগারহার প্রদেশের আচিনে পৌঁছানোর পর স্থানীয় আইএস প্রধান শেখ আবু আর হাসিব ওরফে লোগার ওয়ালা এবং আইএসের গোয়েন্দা শাখার প্রধান আসাদুল্লাহ ওরোকজাই বা আবদুল্লাহ ওরোকজাইয়ের সঙ্গে পরিচয়ের কথা উল্লেখ করেন। ভিডিওতে তানভীর বলেন, তাকে সেখানকার আইএস পরিবারের সদস্যদের ভাতা পরিশোধের জন্য ল্যাপটপ ব্যবহারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে তানভীরের দায়িত্ব পরিবর্তন হয়। বিভিন্ন বাড়িতে অবস্থানরত এতিম ও বিধবাদের সহায়তার দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। এ ছাড়া বিভিন্ন কেন্দ্রে সরবরাহের জন্য রুটি বানানোর কাজে তাঁকে যুক্ত করা হয়। তানভীর ওই ভিডিওতে ওরোকজাই ছাড়া ইসমাইল পাঞ্জাবী নামে আরেকজনের কথাও উল্লেখ করেন। ইসমাইল পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসের হয়ে কাজ করতেন।

এদিকে ঢাকায় বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ দমনের সঙ্গে যুক্ত দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই তানভীরের বাড়ি রাজধানী ঢাকায়। তিনি একজন প্রকৌশলী। বাংলাদেশে অবস্থানের সময় জঙ্গিবাদী সংগঠনের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা ছিল। কয়েক বছর আগে তিনি বাংলাদেশ ছাড়েন।
আফগানিস্তানে তানভীরের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে কিছু জেনেছেন কি না, জানতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, আফগানিস্তানের সন্ত্রাসবাদ দমনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে দিন চারেক আগে তারা বিষয়টি জেনেছেন। তাঁরা এ নিয়ে আরও খোঁজখবর নিচ্ছেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ মার্চ আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে শিখদের উপসনালয় গুরুদুয়ারা হার রাই সাহিবে আইএসের নৃশংস আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ২৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এনডিএসের বরাত দিয়ে পাকিস্তানের এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুরুদুয়ারায় হামলার মূল হোতা আইএস খোরাশান প্রদেশের প্রধান আসলাম ফারুকী ওরফে আবদুল্লাহ ওরাকজাইকে ১৯ জন সহযোগীসহ আটক করা হয়েছে।