জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, একজন নিহত

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বনগ্রামে জুয়া খেলা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে শটগানের গুলি ছুড়তে হয়েছে।

সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তির নাম আজর ফকির (৫০)। তিনি সদর উপজেলার বনগ্রাম পশ্চিমপাড়ার মৃত হামেদ ফকিরের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই সপ্তাহ ধরে করপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব মোল্লার নেতৃত্বে গ্রামে জুয়া খেলার আসর বসছিল। রোববার সন্ধ্যায় বনগ্রাম মধ্যপাড়ায় বিলের মধ্যে ওই জুয়ার আড্ডা উচ্ছেদ করতে যান বনগ্রাম পশ্চিমপাড়ার ফিরোজ ফকিরের নেতৃত্বে কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তি। সেখানে মধ্যপাড়ার জুয়াড়িদের সঙ্গে প্রতিবাদীদের হাতাহাতি ও মারপিটের ঘটনা ঘটে।

বনগ্রাম পশ্চিমপাড়ার এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, রোববার সন্ধ্যায় ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার সকালে পশ্চিমপাড়ার লোকজন একত্র হন। অন্যদিকে সকালে বনগ্রাম মধ্যপাড়ার বাসিন্দা করপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শিকদার শাহ সুফিয়ান এলাকায় মাইকিং করে মধ্যপাড়া ও পূর্বপাড়ার লোকজন একত্র করে দেশীয় অস্ত্র, ঢাল, সড়কি নিয়ে প্রস্তুত হন।

এ সংবাদ পেয়ে পশ্চিমপাড়ার ফিরোজ ফকিরের নেতৃত্বে পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয় প্রতিপক্ষ। এরই একপর্যায়ে এই দুই দল গ্রামবাসী বনগ্রাম বিলে (ফাঁকা স্থানে) মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় আজর ফকির (৫০) নিহত হন এবং পুলিশসহ ১৫ জন আহত হন। আহতদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১০টি শটগানের গুলি ছোড়ে। প্রায় ২ ঘণ্টা পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় এলাকায় পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মধ্যপাড়ার বাসিন্দা করপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শিকদার শাহ সুফিয়ান প্রথম আলোকে বলেন, করপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব মোল্লা ওই জুয়ার আসর বসান। এই জুয়ার আসার ভাঙতে ফিরোজ ফকিরসহ আরও কয়েকজন যান। ওই সময় সজীবকে কিছু না বলে জুয়া খেলা কয়েকজন নিরীহ ব্যক্তিকে মারধর করা হয়। এই নিয়ে মূলত দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সকালে দুই পক্ষের লোক মাঠে নেমে মারামারিতে লিপ্ত হন। জানতে পেরে তিনি পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে খবর দিয়ে তাঁদের সঙ্গে সেখানে যান। এর আগে তিনি কিছুই জানতেন না।

এ বিষয়ে জানতে ফিরোজ ফকিরের মুঠোফোনে কল করা হলে তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সাঈদুর রহমান খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সংঘর্ষের সংবাদ পেয়েই পুলিশ পাঠিয়ে ১০টি গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে এলাকায় অভিযান চলছে।