করোনায় আক্রান্ত প্রকৌশলীর সংস্পর্শে শতাধিক ব্যক্তি, ইউনিয়ন লকডাউন

রাজশাহী
রাজশাহী

রাজশাহীর বাগমারায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া প্রকৌশলী (২৬) ও তাঁদের স্বজনেরা শতাধিক ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন। এতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় তিনি যে ইউনিয়নের বাসিন্দা সেই ইউনিয়ন লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ওই প্রকৌশলীর বাড়িতে পুলিশের পাহারা বসানো হয়েছে।

গতকাল সোমবার রাতে জেলার দ্বিতীয় করোনাভাইরাসের রোগী হিসেবে উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের একটি গ্রামের ওই প্রকৌশলী শরীরে করোনারভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। রাজশাহীর সিভিল সার্জন এনামুল হক গতকাল রাতে ওই প্রকৌশলীর শরীরের করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ওই প্রকৌশলীর পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বলেন, ৬ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত টেক্সটাইল প্রকৌশলী মাড়িয়া ইউনিয়নের একটি গ্রামে তাঁর নানার বাড়িতে আসেন। তাঁর বাবা-মা নানার বাড়িতেই থাকেন। এরপর তিনি জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত হন। করোরাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানায়। পরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে ৮ এপ্রিল বাড়িটি লকডাউন করে দেওয়া হয়। এরপর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি দল তাঁকে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা শুরু করে। অবস্থার উন্নতি হওয়ার পর ১১ এপ্রিল তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহীর ল্যাবে পাঠানো হয়। রাজশাহীর সিভিল সার্জন গতকাল রাতে ওই প্রকৌশলীর শরীরের করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এরপর রাত সাড়ে ১১টায় ইউনিয়নটি লকডাউন ঘোষণা করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরিফ আহম্মেদ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে বলেন, রাতেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ওই প্রকৌশলীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। বাড়িটি লকডাউনের পর থেকে তিনি ঘরেই অবস্থান করলেও পরিবারের অন্য সদস্যরা অবাধে ঘুরে বেড়িয়েছেন। একই বাড়ির বাসিন্দা তাঁর মামা ফসলের খেতে কাজ করেছেন এবং অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে মিশেছেন। বাড়িতেও সবাই একসঙ্গে খেয়েছেন। পরিবারের অন্য সদস্যরাও নিজেদের ঝুঁকিমুক্ত মনে করে ঘুরে বেড়িয়েছেন। তাঁদের ভাষ্য অনুযায়ী ওই ব্যক্তি শতাধিক ব্যক্তি সংস্পর্শে এসেছেন। রাতেই তাঁদের চিহ্নিত করে বাড়িতে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ওই পরিবারের সদস্যরা যাতে লকডাউনের নিয়ম মেনে চলেন, তা নিশ্চিত করতে এবং তাঁদের সমস্যা দেখভাল করার জন্য দুজন গ্রাম পুলিশকে সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে।

বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী বলেন, অসুস্থতার খবর পাওয়ার পর তাঁকে যেসব ওষুধ দেওয়া হয়েছে, তাতে অনেক কাজ হয়েছে। বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন। এ জন্য বাড়িতে রেখেই তাঁর চিকিৎসা চলবে।

এর আগের দিন জেলার প্রথম করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয় পুঠিয়া উপজেলায়। দ্বিতীয় রোগী শনাক্ত হলো বাগমারায়। ১ এপ্রিল থেকে রাজশাহীতে করোনাভাইরাস শনাক্তে পরীক্ষা শুরু হয়।