করোনাকালে ভ্যানে জন্মানো নবজাতকের পরিবারে আনন্দ নেই

হাসপাতালে ভর্তি না নেওয়াতে সড়কে ভ্যানের পর জন্ম দেওয়া নবজাতক কোলে রাজশাহীর বাগমারার মা মাহমুদা। ছবি: প্রথম আলো
হাসপাতালে ভর্তি না নেওয়াতে সড়কে ভ্যানের পর জন্ম দেওয়া নবজাতক কোলে রাজশাহীর বাগমারার মা মাহমুদা। ছবি: প্রথম আলো

অন্তঃসত্ত্বা মাকে হাসপাতালে ভর্তি না নেওয়াতে সড়কে ভ্যানের পর জন্ম নেওয়া রাজশাহীর বাগমারার সেই নবজাতকের পরিবারে আনন্দ নেই। করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে অসহায় হয়ে পড়েছে পরিবারটি। নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নিয়ন্ত্রণকক্ষে ফোন করে সহায়তা চেয়েছেন তাঁরা।

উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের নূরুল ইসলামের স্ত্রী মাহমুদা খাতুন ৯ এপ্রিল ভোরে প্রসবব্যথা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। কিন্তু তাঁকে ভর্তি না নিয়ে দায়িত্বরত নার্স ফিরে দেন। সেখান থেকে ফেরার পথে সড়কে ভ্যানের ওপরই সন্তান প্রসব করেন তিনি। ফুটফুটে একটি মেয়ে হয় তাঁর।

সন্তানকে নতুন কোনো জামা–কাপড় দিতে পারেননি নূরুল–মাহমুদা দম্পতি। ছেঁড়া পুরানো কাপড়ে জড়িয়ে রেখেছেন সন্তানকে। হাতে টাকা–পয়সা নেই বলে চুলাও জ্বলছে না ঠিকমতো। স্থানীয়ভাবে কোনো সহায়তাও পাওয়া যায়নি।

গতকাল সোমবার এই দম্পতির বাড়ি গিয়ে দেখা গেল, তিন বছরের ছেলে আর নবজাতক মেয়েকে নিয়ে বাড়িতেই আছেন নুরুল–মাহমুদা দম্পতি। নূরুল বলেন, দিনমজুর হিসেবে কাজ করে সংসার চালাতেন তিনি। এখন কাজ নেই বলে বেকার। চারজনের পরিবার নিয়ে কষ্টে আছেন তিনি। মেয়েকে একটা নতুন কাপড়ও দিতে পারলেন জানিয়ে মন খারাপ করলেন। জানালেন, ইউএনও অফিসে নিজের অভাবের কথা জানিয়েছেন। তাঁকে সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

মাহমুদা জানালেন, আকিকা করে এখনো মেয়ের নাম রাখেননি। তবে মেয়েকে জ্যোৎস্না নামে ডাকছেন।

বাগমারার ইউএনও শরিফ আহম্মেদ বলেন, ওই পরিবারের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।