নবীগনগরে সংঘর্ষে পা হারানো ব্যক্তি মারা গেছেন

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় পা হারানো মোবারক মিয়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। পা কেটে নিয়ে যাওয়া যুবককে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

স্থানীয় জানা গেছে, ১২ এপ্রিল আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের থানাকান্দি গ্রামে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান ও গ্রামের সর্দার আবু কাউসার মোল্লার পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের দিন ধারালো অস্ত্র দিয়ে মোবারকের বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচে গোড়ালির ওপরের অংশ কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন করে প্রতিপক্ষ কাউসার মোল্লার পক্ষের লোকজন গ্রামে আনন্দ মিছিল করে।

মোবারক চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের পক্ষের গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি কৃষ্ণনগর গ্রামের মৃত মধু মিয়ার ছেলে। ঢাকায় রিকশা চালাতেন। করোনা পরিস্থিতি কারণে তিনি ঢাকা থেকে গ্রামে চলে আসেন। সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের প্রধান হোতা ইউপির চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান, আবু কাউসার মোল্লাসহ ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সংঘর্ষের ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, আনুমানিক ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সী এক যুবক মোবারকের পায়ের কাটা অংশ নিয়ে উল্লাস করে গ্রামে হেঁটে যাচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে এক নারীও হেঁটে যাচ্ছেন। সে সময় ওই যুবকের পেছনে পেছনে ছোট শিশুদের চলতে দেখা গেছে। আর যুবক থেকে বড় ব্যক্তিরা হাতে লাঠি নিয়ে মিছিল করছেন। মোবারকের পায়ের কাটা অংশ নিয়ে হেঁটে যাওয়া ওই যুবকসহ বাকিদের জয় বাংলা বলে স্লোগান দিতেও দেখা গেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) মকবুল হোসেন প্রথম আলোকে জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের প্রধান হোতাসহ ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের এক এসআই ও দুই কনস্টেবল আহত হয়েছেন। পুলিশ বাদী হয়ে ১০৩ জনের নামে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৭০০ থেকে ৮০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে। মোবারকের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ এলাকায় আনা হবে। পুলিশের উপস্থিতিতেই তাঁর লাশ দাফন করা হবে। এলাকার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে। মোবারকে পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনা মামলা দেওয়া হয়নি। মকবুল হোসেন আরও বলেন, পা কেটে নিয়ে যাওয়া ওই যুবককে গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।