প্রতিদিন ৬০০০ জনকে খাবার দিচ্ছে ডিএমপি

করোনা সংক্রমণের মধ্যে রাজধানীতে ঘরে বন্দি প্রায় ছয় হাজার নিম্ন আয়ের মানুষকে প্রতিদিন একবেলা করে খাবার দিচ্ছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। এই খাবারের জন্য কাউকে কোথাও লাইন দিতে হয় না। পুলিশের গাড়িই বাড়ি বাড়ি গিয়ে রান্না করা খাবার পৌঁছে দিয়ে আসে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার শাহ মিজান শাফিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, খাবারের পদ বলতে থাকে জনপ্রতি একটি করে ডিম ও কিছু খিচুড়ি। আবার কোনো কোনো দিন সহজে রান্না ও বিতরণ করা যায় এমন খাবারও দেওয়া হয়। এসব খাবার রান্না করা হয় রাজারবাগ পুলিশ লাইন ও পিওএম–এর (দাঙ্গা দমন বিভাগ) হেঁসেলে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সাড়ে দশটার মধ্যে খাবার প্রস্তুত করে পুলিশের গাড়িতে করে থানায় থানায় পৌছে দেওয়া হয়। কোন থানায় কত খাবার যাবে তার তালিকা আগে থেকে তৈরি করা থাকে। সেই অনুযায়ী খাবার চলে যায় থানায় থানায়। এরপর থানা পুলিশ বিভিন্ন বস্তি ও বসত বাড়িতে গিয়ে সেই খাবার পৌঁছে দিয়ে আসে। দুপুরের মধ্যে সব খাবার বিতরণ শেষ হয়ে যায়।

শাহ মিজান বলেন, এভাবে খাবার বিতরণে কাজ হয়েছে। ঘরে বসে খাবার পাওয়ার কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ আর রাস্তায় আসছে না। বরং নিজের বাড়িতে তারা খাবারের জন্য অপেক্ষা করছেন। এতে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত হচ্ছে।

এত মানুষের খাবারের টাকা কোত্থেকে আসে জানতে চাইলে যুগ্ম কমিশনার বলেন, ভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন পুলিশকে সহায়তা করছে। তারা নিজেরা খাবার বিতরণ করতে গিয়ে জটিলতায় পড়ছেন। আবার পরিস্থিতিও সামাল দিতেও পারছেন না, তার চেয়ে পুলিশকে দিয়ে দিচ্ছেন। তাতে কোনো ধরনের জটিলতা ছাড়াই দরকারি মানুষের কাছে খাবার পৌছে যাচ্ছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও খুশি মনে এ কাজ করছেন। অনেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজের উদ্যোগে খাবারের পাশাপাশি দরকারি সহায়তা দিচ্ছেন।

রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম সেরকমই বললেন। তিনি জানালেন, প্রতিদিন ২০০ প্যাকেট রান্না করা খাবারের পাশাপাশি ৩০২টি অভাবি পরিবারে হাতে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেয় রমনা থানা পুলিশ। মনিরুল বলেন, এই সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেয়ে বড় কাজ মনে হয় আর কিছুই নেই। তিনি দরিদ্র মানুষের সহায়তায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মানুষের সেবা করার এই সুযোগ হয়তো আর পাবেন না। এখনই সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর।